Advertisement
১৯ মে ২০২৪

সিপিএমেই থাকব, বলে দিলেন বিধায়ক

লোভ দেখিয়ে শাসকদল তাদের বিধায়ককে ভাঙিয়ে নিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছিল সোনামুখীর সিপিএম। দলের সেই বিধায়ক অজিত রায়ের বাড়ির গ্রামেই মঙ্গলবার প্রতিবাদ সভা করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

পাশে আছি। সিপিএম বিধায়ক অজিত রায়ের পাশে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও রাজ্য নেতা অমিয় পাত্র। —নিজস্ব চিত্র

পাশে আছি। সিপিএম বিধায়ক অজিত রায়ের পাশে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও রাজ্য নেতা অমিয় পাত্র। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সোনামুখী শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০১:১৯
Share: Save:

লোভ দেখিয়ে শাসকদল তাদের বিধায়ককে ভাঙিয়ে নিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছিল সোনামুখীর সিপিএম। দলের সেই বিধায়ক অজিত রায়ের বাড়ির গ্রামেই মঙ্গলবার প্রতিবাদ সভা করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

অজিতবাবুর বাড়িতে সম্প্রতি পুলিশি হানার প্রতিবাদে সোনামুখী থানায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। এ দিন অজিতবাবুর গ্রাম ইছারিয়ার সভায় সূর্যবাবুর সভা শুরু হয় বিকেল সাড়ে চারটেয়। সঙ্গে ছিলেন দলের রাজ্য কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র, বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি ও ব্লক স্তরের স্থানীয় নেতারা। ভাদ্রের চড়া রোদে লোক হয়েছিল হাজার তিনেক। লোক কম দেখে অমিয়বাবুকে বলতে হল, ‘‘লড়াই করতে এসেছেন। বাঁশবাগান থেকে বেরিয়ে আসুন!’’

অজিতবাবুর ভাই তপন রায়ের বিরুদ্ধে চোলাই বিক্রির অভিযোগ পেয়ে গত ১৯ অগস্ট বিধায়কের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিল পুলিশ। এলাকার মানুষ প্রথমে পুলিশকে বাধা দিয়েছিলেন। পরদিন থানা চত্বরে এই নিয়ে বিক্ষোভও হয়েছিল। পরে অবশ্য পুলিশকর্তারা মেনে নেন, ওই অভিযোগ মিথ্যা ছিল। অজিতবাবু সে দিনই দাবি করেছিলেন, তাঁকে দলত্যাগ করাতে না পেরে তাঁর পরিবারকে হেনস্থার যাবতীয় চেষ্টা চালাচ্ছে শাসকদল। একই অভিযোগ উঠেছে জেলার বড়জোড়ায়। সেখানেও পুলিশের বিরুদ্ধে সিপিএম বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তীকে চাপ দিয়ে তৃণমূলে দলে টানার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে রবিবার বড়জোড়া থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখায় সিপিএম।

এ দিনের প্রতিবাদ সভায় সোনামুখীর বিধায়কের ভাইকে দেখা যায়নি। সূর্যবাবুও ওই পরিবারের কারও সঙ্গে দেখা করতে যাননি। অজিতবাবু অবশ্য জানান, তাঁর ভাই বাইরে থাকায় সভায় আসেননি। কিন্তু, তিনি সভায় প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেন, ‘‘অর্থের ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূল আমাকে দলত্যাগের চেষ্টা করিয়েছিল। কিন্তু আমাকে পয়সা দিয়ে কেনা যায় না। যত দিন বাঁচব, লাল পতাকাকে সম্মান জানিয়ে দলের জন্য কাজ করে যাব।’’

বিধায়ক ও দলীয় কর্মীদের এই প্রত্যয়ের কথা তুলে ধরেই এ দিন সূর্যবাবু বলেন, ‘‘সেদিন এলাকার মানুষ যা বলার বলে দিয়েছেন। থানায় গিয়েও বলে এসেছেন। বড়জোড়া থানাতেও বলে এসেছেন।’’ এর পরেই ‘এ সব হচ্ছে কেন’ প্রশ্ন তুলে তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন। আর এই ভয়ের শুরুটা হয়েছিল ভোটের আগে। ভোটের পরে ২১১ পেয়েও চিন্তা ২ কোটি ১৫ লক্ষ মানুষ মানুষ তাঁদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন! মাত্র ৩০ লাখ বেশি ভোট পেয়ে সরকার গড়েছেন তাঁরা! ফলে নড়বড় করছে তাঁর চেয়ার। সেই জন্যই মানুষের জনমতকে তাচ্ছিল্য করে বিরোধী দল ভাঙানোর নেশা পেয়ে বসেছে তাঁর।’’

জেলা তৃণমূলের এক নেতা দল ভাঙানোর অভিযোগ খারিজ করে কটাক্ষের সুরে পাল্টা বলেছেন, ‘‘আসলে সিপিএম এখন বিলুপ্তপ্রায় দল! ওদের জনপ্রতিনিধিরাই আমাদের সঙ্গে আসতে চাইছেন। আমাদেোর কাউকে ভাঙানোর প্রয়োজন নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM Ajit Roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE