Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩
CPM

CPM: এক ‘বিচ্যুতি’, দুই মনোভাব! সিপিএম অজন্তাকে সাসপেন্ড করলেও ছাড় পেলেন কান্তি-তন্ময়

সমীর পুততুণ্ডর সম্পাদনায় প্রকাশিত পিসিএস মুখপত্রের শারদ সংখ্যায় লেখক তালিকায় দলের এক প্রাক্তন মন্ত্রী ও এক প্রাক্তন বিধায়কের নাম সিপিএমের অন্দরে উষ্মা তৈরি হয়েছে।

অজন্তাকে সাসপেন্ড করা হলেও, কান্তি-তন্ময়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি সিপিএম।

অজন্তাকে সাসপেন্ড করা হলেও, কান্তি-তন্ময়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি সিপিএম। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২১ ২০:২৮
Share: Save:

প্রতিবার পুজোর মরসুমে সিপিএম এবং তাদের নানা গণসংগঠনের পক্ষে একগুচ্ছ শারদ-সংখ্যা প্রকাশিত হয়। দল ও গণসংগঠনের নেতাদের লেখা প্রকাশিত হয় মুখপত্রের সেই সব সংখ্যায়। কিন্তু এ বার দলের বাইরে পিডিএসের মুখপত্রের শারদীয়া সংখ্যায় লিখেছেন সিপিএমের দুই নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ও তন্ময় ভট্টাচার্য। রাজনৈতিক মতাদর্শের নিরিখে পিডিএসের সঙ্গে সিপিএমের দূরত্ব এখন বিস্তর। গত ২০ বছরে বাংলার রাজনীতিতে একাধিকবার সিপিএমের বিরুদ্ধে গিয়ে তৃণমূলের সঙ্গেও পথ হেঁটেছে পিডিএস। তাই সমীর পুততুণ্ডর সম্পাদনায় প্রকাশিত সংখ্যায় লেখক তালিকায় দলের এক প্রাক্তন মন্ত্রী ও এক প্রাক্তন বিধায়কের নাম থাকায় সিপিএমের অন্দরে উষ্মা তৈরি হয়েছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলেই আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রে খবর।

তাই রাজনীতির কারবারিদের মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, এক যাত্রায় পৃথক বিচার কেন? কারণ, ২৮-৩১ জুলাই তৃণমূলের মুখপত্রে চার কিস্তিতে ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ নিয়ে বিশেষ উত্তর সম্পাদকীয় লেখেন অধ্যাপিকা অজন্তা বিশ্বাস। যিনি সিপিএম পলিটব্যুরোর প্রয়াত সদস্য তথা তদানীন্তন রাজ্য সম্পাদকের কন্যা। সঙ্গে তিনি দলের অধ্যাপক সংগঠনের নেতাও বটে। বাংলার শাসকদল তৃণমূলের মুখপত্রে বিশেষ কলম লেখায় প্রথমে শোকজ করা হয়। পরে ২৪ অগস্ট কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তে ছ’মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয় অজন্তাকে। আর পিডিএসের শারদ-সংখ্যা প্রকাশের পর প্রকাশ দিন দশেকের বেশি কেটে গেলেও কান্তি-তন্ময়ের বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। যদিও, সম্প্রতি কান্তি ও তন্ময় উভয়ের সঙ্গেও একাধিক ইস্যুতে সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্ঘাত হয়েছে। ২ মে ভোটে ভরাডুবির দিনেই এক বৈদ্যুতিন মাধ্যমে দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তিন মাসের জন্য দমদম উত্তরের প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময়কে ‘সেন্সর’ করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম।

কিন্তু পিডিএস মুখপত্রের শারদ-সংখ্যায় লেখা সত্ত্বেও কেন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না? এমন প্রশ্ন উঠছে স্বাভাবিক ভাবেই। তাঁদের লেখায় বিতর্কের বিশেষ উপাদান নেই। তবে ভিন্ন রাজনৈতিক দলের মুখপত্রে লিখেও কেনই বা শাস্তির মুখে পড়বেন না তাঁরা? এমনও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জবাবে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পিডিএস আর তৃণমূল এক নয়। আমরা পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপি-র বিরুদ্ধে। এদেঁর সঙ্গে যদি দলের কেউ কোনও যোগাযোগ রাখেন বা মুখপত্রে কিছু লেখেন তা হলে অবশ্যই শাস্তির মুখে পড়বেন। কিন্তু পিডিএসের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান এমন নয়।’’ প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সিপিএমে ছেড়ে বেরিয়েই পিডিএস গঠন করেছিলেন কটোয়ার প্রাক্তন সাংসদ সৈফুদ্দিন চৌধুরী ও তৎকালীন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সম্পাদক সমীর পুততুণ্ড। তাই একই বিচ্যুতি সত্ত্বেও, পৃথক মনোভাব দেখাচ্ছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। এমনটাই মনে করছেন বাংলার রাজনীতির কারবারিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.