Advertisement
০২ জুন ২০২৪
CPIM

CPIM: নিচু তলায় সিপিএমের  এ বার ‘নজরে পঞ্চায়েত’

রাজ্য জুড়ে দুর্নীতির প্রতিবাদে নানা কর্মসূচি নিয়ে পথে নেমেছে সিপিএম। জেলায় জেলায় বিক্ষোভ, আইন অমান্যের মতো কর্মসূচি চলছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও ফরাক্কা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২২ ০৬:৩৮
Share: Save:

শাসক দলের নেতাদের আঙুল ফুলে কী ভাবে কলাগাছ হয়েছে, তার হদিস দিতে শুরু হয়েছিল ‘পাহারায় পাবলিক’। এ বার তৃণমূল স্তরে সিপিএম শুরু করছে ‘নজরে পঞ্চায়েত’। রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত স্তরে বেনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য তুলে আনার পাশাপাশি গ্রামসভা ডেকে পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে আলোচনার দাবিতে আসরে নামছে তারা। তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় ‘টেন্ডার-রাজ’ চলছে বলে সরব হয়েছে কংগ্রেসও। শাসক তৃণমূল অবশ্য পাল্টা বলছে, কোনও অভিযোগ থাকলে কেউ প্রশাসনকে জানাতেই পারেন। বিরোধী দলের এমন কর্মসূচি গুরুত্বহীন।

রাজ্য জুড়ে দুর্নীতির প্রতিবাদে নানা কর্মসূচি নিয়ে পথে নেমেছে সিপিএম। জেলায় জেলায় বিক্ষোভ, আইন অমান্যের মতো কর্মসূচি চলছে। বিজেপি নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়ে রাখলেও বামেরা এখন কেন্দ্রীয় ভাবে তেমন কর্মসূচিতে যেতে চায় না। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে নজরে রেখে ১০০ দিনের কাজ, জবকার্ড সংক্রান্ত বেনিয়ম এবং বার্ধক্য ভাতা-সহ নানা প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে যা অভিযোগ আছে, সে সবকে হাতিয়ার করে নিচু তলায় আন্দোলন গড়ে তুলতে চায় তারা। পাশাপাশিই ‘পাহারায় পাবলিক’ কর্মসূচিকে সাড়া পাওয়ার পরে পঞ্চায়েত স্তরের লুট, দুর্নীতির অভিযোগের তথ্য মানুষের কাছ থেকে নিয়ে সামনে আনার লক্ষ্যে সিপিএম শুরু করছে ‘নজরে পঞ্চায়েত’।

আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে রবিবার ওই ঘোষণা করতে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘পাহারায় পাবলিকের পরে ‘নজরে পঞ্চায়েত’ চলবে। বিভিন্ন ‘ইনসেনটিভ স্কিম’ নিয়ে পঞ্চায়েত স্তর থেকে দাবি জানানো হবে। লুটের কত এফআইআর হয়, দেখা যাক! বিডিও, এসডিও-কে এক মাসের মধ্যে গ্রামসভা ডাকার নির্দেশ দিতে হবে, এই দাবি আমরা করব। পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে গ্রামসভাতেই আলোচনা হবে। প্রশাসন না ডাকলে আমাদের যেখানে যা শক্তি আছে, তা-ই নিয়েই লোকের কাছে এই দাবি তুলব।’’

মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, ৯টি জেলার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতে কোনও দুর্নীতি বা অনিয়ম থাকলে রং না দেখেই এফআইআর দায়ের করতে হবে। এই প্রেক্ষিতে সেলিমের বক্তব্য, ‘‘যে সব দুর্নীতি আজ উঠে আসছে, সে সব হয়েছে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জন্য। পুলিশকে পঙ্গু করে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন আগে ব্যবস্থা নিতে বলেননি? আর বিরোধীরা অভিযোগ জানাতে গেলে তাদেরই গাঁজা-সহ নানা মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে!’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের আরও প্রশ্ন, ‘‘বগটুই-কাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন সব অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। বাসন্তীতে শনিবারই তৃণমূলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কোথা থেকে এল অস্ত্র? এখন দেখা যাক, কত এফআইআর হয়!’’

ফরাক্কায় এ দিনই দলের চিন্তন শিবিরে এসে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘গ্রামে গ্রামে তৃণমূল জমানায় কী হয়েছে, বাংলার মানুষ তা দেখছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হতে তাদের টেন্ডার হয়, প্রধানের জন্য টেন্ডার হয়, জেলা পরিষদের জন্য টেন্ডার হয়। কোনও টেন্ডার ৫০ লক্ষ টাকার, কোনও টেন্ডার এক কোটির, কোনও টেন্ডার পাঁচ কোটির। এটাই আজকের তৃণমূলের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা!’’ কবিগুরুর বোলপুর তথা শান্তিনিকেতন অনুব্রত মণ্ডলদের দৌলতে কী হয়েছে, তার উল্লেখ করে অধীরবাবুর মন্তব্য, ‘‘পশ্চিমবাংলাকে লুট করে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছে শাসক দল।’’

বিরোধীদের অভিযোগ নস্যাৎ করে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেছেন, ‘‘এই সব হিসেব-নিকেষ করেই গত বিধানসভায় সিপিএম এবং কংগ্রেসকে মানুষ শূন্য করে দিয়েছে! এ বছরেও রাজ্য ১৪টি কেন্দ্রীয় পুরষ্কার পেয়েছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আর সরকার নিজে থেকেই বলেছে, কোথাও কোনও ত্রুটি থাকলে সরাসরি প্রশাসনকে জানাতে, পুলিশে এফআইআর করতে। তার পরে ওদের এই কথার কোনও গুরুত্ব থাকে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM Panchayat Election TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE