আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য পূর্ণ উদ্যমে প্রস্তুতি শুরু করার ডাক দিল সিপিএম। পঞ্চায়েতের জন্য তারা অন্যতম হাতিয়ার করতে চাইছে ১০০ দিনের কাজ ঘিরে অনিয়ম এবং স্থানীয় স্তরে দুর্নীতির অভিযোগকে। ব্লক স্তর থেকে জোরালো আন্দোলনের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে ময়দানে নামার কথা বলা হল সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে।
আলিমুদ্দিনে দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে সাংগঠনিক কিছু সিদ্ধান্তও হয়েছে। প্রবীণ নেতা বিমান বসুকেই বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান পদে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত বুধবার রাজ্য কমিটিতে জানিয়ে দিয়েছেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এর পরে বামফ্রন্টের বৈঠক ডেকে ওই সিদ্ধান্তকে আরও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে। বিমানবাবুর সঙ্গে আরও দুই বর্ষীয়ান নেতা অশোক ভট্টাচার্য ও মৃদুল দে-কে সিপিএমের রাজ্য কমিটির আমন্ত্রিত সদস্যও করা হয়েছে। ওই তিন নেতাই বয়স-নীতির কারণে দলের সব কমিটি থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন। কিন্তু শারীরিক ও মানসিক ভাবে চাঙ্গা নেতাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর যে সিদ্ধান্ত দলের কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়েছিল, সেই অনুযায়ীই তাঁদের রাজ্য কমিটিতে আমন্ত্রিত সদস্য করে নেওয়া হয়েছে বলে সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা। এ বারও আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের চার তলায় রাজ্য কমিটির বৈঠক চলাকালীন দো’তলার দফতরে থাকলেও অনুশাসন মেনে বিমানবাবু বৈঠকে যাননি। এ বার থেকে বৈঠকে থাকতে তাঁর অসুবিধা হবে না! নতুন রাজ্য কমিটি তৈরি হলে তার তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন শাখার যে পুনর্গঠন হয়, সেখানে অবশ্য বড়সড় কোনও রদবদল হয়নি।
‘লুটেরাদের পঞ্চায়েত থেকে মানুষের পঞ্চায়েত’— এই স্লোগানকে সামনে রেখে সিপিএম এ বার ভোটে লড়ার কথা বলছে। তারা ১০০ দিনের কাজের নজর দিচ্ছে ওই হাতিয়ারকে একই সঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার সুযোগ আছে বলে। রাজ্য কমিটির জবাবি বক্তৃতায় তারই পাশাপাশি সেলিম বলেছেন, ‘পাহারায় পাবলিক’ কর্মসূচিতে ভাল সাড়া মিলেছে। কিন্তু সবই ‘পাবলিকে’র উপরে ছেড়ে রাখলে চলবে না, ‘পাহায়ার পার্টি’কে থাকতেই হবে। স্থানীয় স্তরে শাসক দলের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা কী ভাবে সম্পত্তির পাহাড় বানিয়েছেন, সেই তথ্য দল প্রচারে কাজে লাগাবে। প্রয়োজনমতো সেই তথ্য পেশ করে আদালতেও যাওয়া হবে।