E-Paper

১৩ উপাচার্যের বেতন বন্ধে সরব কুটা-জুটা

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস নিয়োজিত অস্থায়ী উপাচার্য শান্তা দত্ত অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি আদৌ চিন্তিত নন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩ ০৮:৪৪
Bratya Basu

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই আচার্য-রাজ্যপালের নিজস্ব সিদ্ধান্তে সরাসরি নিযুক্ত অস্থায়ী উপাচার্যদের বেতন ও ভাতা বন্ধের সরকারি নির্দেশে নিয়ে শিক্ষা শিবির ও শিক্ষক সংগঠনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শিক্ষা দফতরের সংশ্লিষ্ট নির্দেশে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না-করে রাজ্যপাল সরাসরি যে-সব অস্থায়ী উপাচার্যকে নিয়োগ করেছেন, তাঁদের নিয়োগ ‘বেআইনি’। তাই অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে তাঁদের যে-বেতন ও ভাতা পাওয়ার কথা, তা তাঁরা পাবেন না।

আর রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, ‘বিষয়টি বিচারাধীন। মাননীয় হাই কোর্ট ভাল জানেন। যাঁরা আদালতকে উপেক্ষা করে তাড়াহুড়ো করে কাজ করছেন, তাঁদের পরে অনুতাপ প্রকাশ করতে হতে পারে।’

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস নিয়োজিত অস্থায়ী উপাচার্য শান্তা দত্ত অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি আদৌ চিন্তিত নন। শান্তা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘১৬৬ বছরের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীনতায় ভীষণ ভাবে ভুগছিল। সেই পরিস্থিতিতে আচার্য-রাজ্যপাল আমায় দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই দায়িত্ব আমি সামলে যাচ্ছি। উপাচার্য হিসেবে বেতন, ভাতা বন্ধ নিয়ে আমি একেবারেই চিন্তিত নই।’’

কিন্তু প্রায় এক সুরে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (কুটা) সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা দুই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এর ফলে শিক্ষা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি সার্বিক ভাবে ক্ষতিগ্ৰস্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই আধিপত্যবাদের লড়াই থেকে শিক্ষার মুক্তি চাই। এ ভাবে বেতন ও ভাতা বন্ধ করে দেওয়াটা কোনও সুরুচির পরিচয় নয়।’’

উচ্চশিক্ষা দফতর তথা রাজ্য সরকার যে-তেরোটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যদের বেতন-ভাতা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য অমিতাভ দত্ত অবশ্য এ দিন এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি (জুটা)। এক বিবৃতিতে জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানান, রাজ্য সরকারের বেআইনি নিয়োগের দরুন এবং আইনানুগ ভাবে যথাসময়ে পূর্ণ সময়ের উপাচার্য নিয়োগ না-হওয়ার কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জুটা মনে করে, এই নির্দেশ সরকারি ক্ষমতার এক জঘন্য প্রকাশ, যা ভীতিপ্রদর্শনের মাধ্যমে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির উপরে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাড়তে পারে, কিন্তু শিক্ষার সামগ্রিক স্বার্থে পরিস্থিতির কোনও ইতিবাচক বদল হবে না। সরকার এবং আচার্যের অসুস্থ টানাপড়েনে এই ধরনের পদক্ষেপ কার্যত শিক্ষক সমাজেরই অপমান। তাঁর প্রশ্ন, রাজ্য সরকার ‘বেআইনি ভাবে’ নিয়োগ করায় যে-সব স্থায়ী উপাচার্যকে এর আগে পদত্যাগ করতে হয়েছিল, তাঁদের বেতন ও ভাতার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে?

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

vice-chancellor College West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy