ফেসবুকে এক মহিলার বন্ধুত্বের ফাঁদে পড়ে কয়েক লক্ষ টাকা খুইয়েছেন শহরের এক ব্যবসায়ী।
ভুয়ো মেল পাঠিয়ে এক ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, নেট ব্যাঙ্কিং আইডি-পাসওয়ার্ড জেনে হাতানো হয়েছে টাকা।
পুলিশ সূত্রে খবর, সাইবার অপরাধের এমন নানা অভিযোগ জমা পড়ে লালবাজারে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে তদন্ত গতি পাচ্ছে না। কারণ, সরকারি বেড়াজাল পেরিয়ে গুগ্ল, ফেসবুকের মতো সংস্থার দ্বারস্থ হতে গিয়ে শ্লথ হচ্ছে তদন্ত। কী ভাবে সব বাধা কাটিয়ে এগোনো যায়, কলকাতা পুলিশকে তেমনই কিছু পরামর্শ দিলেন মার্কিন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মেলিসা হ্যাথাওয়ে।
বৃহস্পতিবার আমেরিকান সেন্টারে মেলিসা বলেন, তদন্তের গতি বাড়ানো নিয়ে মূলত কথা হয়েছে। কারণ, সাইবার অপরাধ বাড়ছে। আমলাতন্ত্রের গতিতে তদন্ত চললে হবে না। কলকাতা পুলিশের এক গোয়েন্দাকর্তা জানান, মেলিসার সঙ্গে সরাসরি বৈঠক হয়নি তাঁদের। তবে এ নিয়ে এক আলোচনাচক্রে গিয়েছিলেন সাইবার ক্রাইম থানার ওসি সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। মেলিসা জানান, তিনি মুম্বই পুলিশের সঙ্গেও এ নিয়ে কথা বলেছেন।
গোয়েন্দারা বলছেন, শুধু প্রতারণা বা জালিয়াতিই নয়, সাইবার অপরাধের সঙ্গে এখন জুড়েছে সন্ত্রাসবাদ। সাইবার মাধ্যমকে ব্যবহার করে জঙ্গি সংগঠনগুলি নিজেদের মতবাদ ছড়াচ্ছে, অর্থ সংগ্রহ করছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলির কম্পিউটারেও বাড়ছে হ্যাকার হানা। গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের দাবি, চলতি বছর দেশের নানা সরকারি সাইটে হ্যাকার হানার ঘটনা ঘটেছে। বাদ যায়নি সিবিআই-এর ওয়েবসাইটও। এর দায় স্বীকার করেছে পাক সাইবার মুজাহিদিন। আগে চিনা সাইবার আর্মি নামেও এক দল হ্যাকার এমন হানা চালিয়েছিল।
তবে কি সরকারি ক্ষেত্রেও সাইবার-পেশাদারদের প্রয়োজন বাড়ছে? মেলিসার বক্তব্য, ‘‘যে ভাবে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তথ্য চুরি বাড়ছে, তাতে এ ধরনের পেশাদারদের প্রয়োজন বাড়ছে।’’ প্রসঙ্গত, দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও এমন হানা রুখতে পেশাদার নিয়োগের কথা শোনা যাচ্ছে। সেনা সূত্রে খবর, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সাইবার সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রশিক্ষিত বাহিনী (সাইবার কম্যান্ড) গড়ার পরিকল্পনা চলছে। মেলিসা বলেন, ‘‘যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়, তার অনেকটা নিয়ন্ত্রিত হবে সাইবার মাধ্যমে।’’
তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে সাইবার নজরদারির প্রসঙ্গও। সম্প্রতি হোয়্যাট্সঅ্যাপ-সহ বিভিন্ন অনলাইন মেসেজ ও মেলে নজরদারি নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। ওই নীতি প্রণয়নের কথা বলেও তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র। যদিও সাইবার বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, গুগ্ল, ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুললে বা স্মার্টফোনে অ্যাপ ডাউনলোড করলে ব্যক্তিগত তথ্য ওই সংস্থার কাছে চলে যায়। গোপনীয়তা থাকে না। একই কথা জানান মেলিসাও। তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্যের অনেক ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, বিষয়টি তাঁরা জানেন না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy