ছবি: সংগৃহীত।
আয়লার সময়ে সে অর্থে কোনও আগাম প্রস্তুতি ছিল না। তবে বুলবুল বা ফণীর আগে তৎপরতা ছিল অনেক বেশি। বিশেষত নদী, সমুদ্রতীরবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরানোয় জোর দেওয়া হয়েছিল। এ বারেও উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে সে ভাবেই কাজ চলছে। খাবার, জল মজুতের পাশাপাশি ত্রাণ শিবিরে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার বা হাতশুদ্ধি, সাবান রাখা হচ্ছে। মানা হচ্ছে দূরত্ব-বিধি। যে কারণে অনেক বেশি সংখ্যায় ত্রাণ শিবির চালু হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রে দূরত্ব-বিধি মানা সম্ভব হচ্ছে কি না, প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
আমপানের সর্বাধিক প্রভাব দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর ও হলদিয়ায় পড়ার কথা। সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। মঙ্গলবার হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, ঘূর্ণিঝড়ের কোপে পড়তে চলেছে নন্দীগ্রাম, খেজুরি, নয়াচরও। তাই নয়াচরের বাসিন্দাদেরও সরানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের খবর, উপকূলবর্তী কাঁথি-১, দেশপ্রাণ, রামনগর-১, ২ ও খেজুরি- ২ ব্লকের অন্তত ৩১ হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরানো হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরেও ২১টি ব্লকের মধ্যে ১৪টি ব্লককে সতর্ক করা হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে নদী তীরের ১২ হাজার বাসিন্দাকে।
উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সুন্দরবনের বিপজ্জনক এলাকা থেকে বাসিন্দাদের শিবিরে সরানোর কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। করোনা-আবহে দূরত্ববিধির কথা মাথায় রেখে সাইক্লোন ও ফ্লাড শেল্টারের পাশাপাশি স্কুলগুলিকেও শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রশাসন জানিয়েছে, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ১ ও ২, হাসনাবাদ, হাড়োয়া এবং মিনাখাঁ ব্লকে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বেশি বলে অতিরিক্ত নজরদারি শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: কিছুটা ক্ষমতা হ্রাস, আমপান তবুও ‘মারাত্মক’, অভিমুখ সুন্দরবনের দিকে
আরও পড়ুন: দোকানপাট বন্ধ রাখার পরামর্শ, রাজ্যে সরানো হল ৪ লক্ষাধিক মানুষকে
দু’জেলাতেই কোথাও কোথাও আতঙ্কের কারণ নড়বড়ে নদীবাঁধ। দ্রুত কাজ চলছে নানা জায়গায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা, সাগর, মৌসুনি, ঘোড়ামারা-সহ বিভিন্ন দ্বীপের পরিস্থিতি কী হতে পারে, তা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন। গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, “বুলবুল ভাটার সময় আছড়ে পড়েছিল। আমপান জোয়ারের সময়ে আছড়ে পড়লে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার অবস্থা কেমন দাঁড়াবে, তার ধারণাই নেই।”
ক্যানিং মহকুমাশাসকের দফতরে কন্ট্রোল রুম খুলে বাসন্তী, গোসবা, ক্যানিং এলাকায় নজরদারি চলছে। বিদ্যুৎ বিপর্যয় সামাল দিতে দ্বীপ এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ও ট্রান্সফর্মার মজুত রাখা হয়েছে। টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হবে ধরে নিয়েই কাকদ্বীপে হ্যাম রেডিয়োর স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy