খালি করে দেওয়া হয়েছে দিঘার সমুদ্র সৈকত। —নিজস্ব চিত্র
ফণা তুলে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। এ রাজ্যে প্রবল বেগে আছড়ে পড়ার আগেই উপকূলবর্তী জেলাগুলি থেকে গ্রামবাসীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে দিল রাজ্য সরকার। পাশাপাশি গ্রামে গ্রামে খাবার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
কলকাতা থেকে এখন ফণীর অবস্থান প্রায় ৮৩৫ কিলোমিটার দূরে। দিঘা থেকে দূরত্ব ৬৫০ কিলোমিটার। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, শুক্রবার ওড়িশায় প্রায় ২০৫ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ার পর এ রাজ্যের দিকে অভিমুখ হবে ফণীর। তার পর চলে যাবে বাংলাদেশের দিকে। তার আগেই শুক্র-শনিবার প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে সর্বোচ্চ ১১৫ কিলোমিটার বেগে উপকূলের জেলাগুলিতে তাণ্ডব চালাবে ফণী।
১০ বছর আগে আয়লার গতিও ছিল ১২০ কিলোমিটারের ধারে কাছে। ঝড়ের দাপটে দুই ২৪ পরগনার সুন্দরবন অঞ্চলে সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। নদীবাধ ভেঙে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সেই অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে, এ বার সব রকমের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
আরও পডু়ন: শুক্রবার গভীর রাতেই এ রাজ্যে আছড়ে পড়ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণী, সতর্ক করল হাওয়া অফিস
আরও পড়ুন: ‘প্রবল আতঙ্কে আছি, জানি না কী হবে, জগন্নাথই ভরসা’
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ নবান্নে মুখ্যসচিব মলয় দে আপাতকালীন বিভাগগুলির আধিকারীকদের সঙ্গে বৈঠকে করেন। ছিলেন উপকূলরক্ষী বাহিনী, পুলিশ-প্রশাসন, পূর্ত, সেচ এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর আধিকারিকেরা। আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তা খতিয়ে দেখার পর, কোন কোন জেলায় ফণীর প্রভাব পড়তে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়।
নবান্ন সূত্রে খবর, ১৫টি জেলায় ফণী তাণ্ডব চালাতে পারে। তার মধ্যে দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুরে সব থেকে বেশি প্রভাব পড়ে বলে মনে করা হচ্ছে। এই জেলাগুলিতে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, দুই বর্ধমান এবং নদিয়াতেও এর প্রভাব ভালই পড়বে। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেও বৃষ্টি হবে। দিঘা, মন্দারমণি, বকখালি, সাগরে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলাগুলিতে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে মাইকিং করে প্রচার চালানো হচ্ছে। এ দিন বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসকেরাও। নবান্নের তরফে কলকাতা, হাওড়া পুরসভা-সহ বিভিন্ন জেলাশাসকদের সব রকম পরিস্থিতির জন্যে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে সর্বক্ষণের জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে— ১০৭০।
এ দিন ভাটপাড়ায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একটি মনিটারিং সেল খোলা হয়েছে। তৈরি থাকতে বলা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও। আমরা সব রকম ভাবে তৈরি রয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy