Advertisement
১১ মে ২০২৪
COVID-19

টিকা চাই, কিন্তু কোথায় পাই?

 চাহিদার তুলনায় করোনার প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিনের ভাঁড়ার তলানিতে। উদ্বেগে মাথার চুল ছেঁড়ার মত অবস্থা জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের।

টিকা পেতে লম্বা লাইন। কৃষ্ণনগর সদর হাসাপাতালে। নিজস্ব চিত্র

টিকা পেতে লম্বা লাইন। কৃষ্ণনগর সদর হাসাপাতালে। নিজস্ব চিত্র

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২১ ০৭:০১
Share: Save:

করোনা সংক্রমণের হার বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যেতেই টিকার জন্য জেলার কার্যত হাহাকার শুরু হয়েছে।

চাহিদার তুলনায় করোনার প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিনের ভাঁড়ার তলানিতে। উদ্বেগে মাথার চুল ছেঁড়ার মত অবস্থা জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের। স্বাস্থ্যভবনে বারবার টিকা চেয়ে পাঠিয়েও তাঁরা তা পাচ্ছেন না বলে জেলা কর্তাদের দাবি। অথচ, হাসপাতাল গুলিতে প্রতিদিন টিকা নেওয়ার ভিড় বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন হাসপাতালে টিকা নেওয়ার লাইনে ধাক্কাধাক্কি, মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। বহু জায়গায় মানুষ দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানোর পর কিছু লোকের হাতে টোকেন ধরিয়ে জানানো হয়েছে, শুধু তাঁরাই ওই দিন টিকা পাবেন। বাকিদের চলে যেতে বলা হয়েছে। তাতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মানুষ। অনেক ক্ষেত্রে আবার বার বার হত্যে দিয়েও টিকা নেওয়ার তারিখ পাওয়া যাচ্ছে না।

নদিয়ার মোট জনসংখ্যা প্রায় ৬৬ লক্ষ। তার মধ্যে ৪৫ বছরের উর্ধ্বে থাকা মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৩ লক্ষ। তাঁদের মাত্র ৩ লক্ষ ৭০ হাজার জনকে প্রথম ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আরও প্রায় ন’লক্ষ মানুষকে কবে, কী ভাবে টিকা দেওয়া যাবে বা এর পর ১৮ বছর বয়স থেকে টিকা দেওয়া শুরু হলে কী হবে তা নিয়ে স্বাস্থ্য কর্তাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে।

জেলার মোট জন সংখ্যায় ৪৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের সংখ্যা ২৫শতাংশ। এবং ১৮-৪৫ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৫ শতাংশ। অর্থাৎ, ১ মে থেকে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে হবে। টিকার এই হাল হলে আগামী দিনে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তাদের অনেকেই।

গত ১৯ এপ্রিল ২৫ হাজার টিকা পাঠানো হয়েছিল জেলায়। তার পর থেকে এখনও কোনও টিকা আসেনি। এখনও পর্যন্ত নদিয়া জেলায় মোট ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টিকা এসেছে। এতে কত দিন চালানো সম্ভব? জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ১৭০টি টিকাকেন্দ্র থেকে দিনে প্রায় ২২ হাজার জনকে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু টিকার ভাঁড়ারে টান পড়তেই কেন্দ্রের সংখ্যা শুক্রবার ২৯-এ এসে দাঁড়িয়েছে। নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ২০ এপ্রিল শেষ টিকা দেওয়া হয়েছে। তার পর থেকে টিকাদান বন্ধ। প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। শুক্রবার টিকা দেওয়া বন্ধ আছে হরিণঘাটা গ্রামীণ হাসপাতালেও।

জেলার এক কর্তার কথায়, “শুক্রবার আমাদের হাতে মাত্র ৫ হাজারের মতো টিকা ছিল। বৃহস্পতিবার ভোট থাকায় জেলা হাসাপাতালের দু’টি টিকাদান কেন্দ্র বন্ধ ছিল। সেগুলি খোলা থাকলে এই পাঁচ হাজারও থাকত না। শুক্রবার থেকেই টিকা দেওয়া এখানে বন্ধ করে দিতে হত।” পরিস্থিতি এমন জায়গায়া দিয়ে দাঁড়িয়েছে যে, টিকার অভাবে শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল থেকে শুক্রবার শুধুমাত্র দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE