E-Paper

ধান ভাঙানোর বরাতে সমবণ্টন নীতির দাবি

ধান কেনার প্রক্রিয়ায় কিছু চালকল বেশি বরাত পাচ্ছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তে সম্প্রতি এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৭

—প্রতীকী ছবি।

ধান ভাঙানোর জন্য কারও জুটেছে ১৭ হাজার টনের বরাত, কেউ পেয়েছে মাত্র ১৬৪ টন। কোনও চালকল দশটি কৃষি সমবায়ের ধান পাচ্ছে, কেউ পাচ্ছে দু’টি সমবায়ের। রাজ্য খাদ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠকে ধান ভাঙানোর বরাত পাওয়ার ক্ষেত্রে এমন ‘অসম বণ্টনের’ অভিযোগ তুলেছেন ‘বেঙ্গল রাইসমিল অ্যাসোসিয়েশন’-এর কর্তারা। সমবণ্টন নীতির জন্য আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। রেশন দুর্নীতিতে যখন বেশ কয়েকটি চালকল তদন্তকারীদের আতশকাচের তলায়, তখন এমন অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

ধান কেনার প্রক্রিয়ায় কিছু চালকল বেশি বরাত পাচ্ছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তে সম্প্রতি এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর। বৃহস্পতিবার খাদ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠকে চালকল সংগঠনের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগম (ইসিএসসি) সমবণ্টন নীতি মানে না। তাই এখন নানা প্রশ্ন উঠছে। তাঁদের দাবি, কোনও কোনও চালকল সরকার নির্ধারিত ধান ভাঙানোর ক্ষমতার বাইরে গিয়ে বরাত পায়। তাদের সঙ্গে ৮-১০টি কৃষি সমবায়কে যুক্ত করা হয়। উল্টো দিকে, অনেক চালকল এক বা দু’টি কৃষি সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত থেকে অল্প ধান পায়। যে সব চালকল বেশি ধান পাচ্ছে, সেগুলিই কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে পড়ছে বলে সংগঠনের ধারণা।

খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, এ বার ৫৪১টি চালকলের সঙ্গে ধান ভাঙানোর চুক্তি করতে উদ্যোগী হয় দফতর। কিন্তু ১ নভেম্বর পর্যন্ত তাদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি আগ্রহ না দেখানোয় জেলা প্রশাসনকে ‘কড়া’ হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়। ১০ নভেম্বরের মধ্যে চুক্তি করলে চালকলগুলিকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথাও জানিয়েছিল খাদ্য দফতর। দফতর সূত্রে দাবি, তার পরেই অনেক চালকল চুক্তিতে রাজি হয়েছে। খাদ্য দফতর জানায়, বেশির ভাগ জেলায় ধান ভাঙাতে লিপিবদ্ধ সব চালকলই চুক্তি করেছে। সার্বিক ভাবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ৮৮% চালকল চুক্তি করে ফেলেছে। পূর্ব বর্ধমান, জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম ও দক্ষিণ দিনাজপুরের কিছু চালকল বাকি রয়েছে। তাদের চুক্তিও দ্রুত হবে বলে দফতরের আশা।

চালকল সংগঠনের সভাপতি সুশীল চৌধুরী বলেন, “নানা কারণে চালকল মালিকদের মধ্যে চুক্তি নিয়ে অনীহা রয়েছে। তবে তাঁদের সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা মনে করানো হয়েছে।” চালকল মালিকদের একাংশের অভিযোগ, চুক্তি না করলে নানা বিষয়ে অভিযানের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। খাদ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠকে সে প্রসঙ্গ তুলে চালকলের প্রতিনিধিরা জানান, ২০১৬ সালে চালকলকে ‘চাপ’ দিয়ে চুক্তি করানোর চেষ্টার অভিযোগের পরে হাই কোর্ট স্বেচ্ছায় চুক্তির বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিল।

প্রশাসন অবশ্য চাপ দেওয়ার কথা মানেনি। চালকল সংগঠনের কর্তা আব্দুল মালেক বলেন, “আমাদের সুবিধা-অসুবিধা লিখিত ভাবে জানানো হবে।’’ খাদ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “চালকলগুলির সঙ্গে চুক্তির পরেই বণ্টন নীতি নিয়ে কী সমস্যা রয়েছে, তা দেখা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Paddy West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy