শ্রাবণ পেরিয়ে ভাদ্র মাস পড়ে গিয়েছে। মাঝে দিন কয়েক ঝেঁপে বৃষ্টিও হয়েছে। কিন্তু ডেঙ্গির প্রকোপ কমছে না। আটকানো যাচ্ছে না ডেঙ্গিতে মৃত্যুও। শনিবারও ডেঙ্গি-আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে মারা গিয়েছেন দু’জন। এঁদের এক জন শ্রীরামপুর আর অন্য জন দমদমের বাসিন্দা। প্রথম জন মারা গিয়েছেন একবালপুরের এক নার্সিংহোমে। দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের এক হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে দ্বিতীয় জনের।
এই দুই অঞ্চলেই এ বছর প্রথম থেকে ডেঙ্গির হামলা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। শ্রীরামপুরের কুমিরজলা রোডের বাসিন্দা অসিত দাস (৩৪) গত ৪ তারিখ থেকে জ্বরে ভুগছিলেন। প্রথমে তাঁকে কোন্নগরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর কিডনি অকেজো হয়ে পড়ায় ডায়ালিসিস প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তখন স্থানান্তরিত করা হয় একবালপুরের নার্সিংহোমে। ডেঙ্গির জন্য তাঁর প্লেটলেট কমে ২৭ হাজার হয়ে গিয়েছিল।
কলকাতার দুই হাসপাতালে গত ১০ ও ১৬ অগস্ট দুই রোগীর মৃত্যু হয়। সেই সময় তাঁদের মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি ছিল কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শনিবার স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ওই দু’টি মৃত্যুর কারণও ডেঙ্গি। এঁদের মধ্যে এক জনের বাড়ি ছিল দমদমে। অন্য জনের সোনারপুরে।
শনিবারই কলকাতা পুরসভার পতঙ্গবিদদের একটি দল কলেজ স্ট্রিটে বর্ণ পরিচয় মার্কেটে ডেঙ্গিবাহী মশার লার্ভা খুঁজে বার করার অভিযান চালায়। ওই বাজারটির কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। বাজারের একাধিক জায়গায় জমা জলের পাত্র নজরে পড়লেও সেখানে ডেঙ্গিবাহী এডিস ইজিপ্টাইয়ের লার্ভা মেলেনি বলে জানিয়েছেন পতঙ্গবিদেরা।
মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ জানান, বর্ণ পরিচয় বাজারের এ এবং বি ব্লকের প্রথম এবং দ্বিতীয় তলে কয়েকটি জায়গায় জমা জলে অ্যানোফিলিস এবং কিউলেক্সের লার্ভা মিলেছে। তবে প্রতিটি ফ্লোরেই জমা জলের পাত্র এবং জঞ্জাল পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। বেসমেন্টে একাধিক জায়গায় গাপ্পি মাছও দেখা গিয়েছে। পতঙ্গবিদদের দাবি, গাপ্পি মাছ মশার লার্ভা খেয়ে নেয় বলেই ওখানে এডিসের সন্ধান মেলেনি।
তবে পুরসভার পতঙ্গবিদেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পিছন দিকের চত্বরে পড়ে থাকা কয়েকটি কৌটোর মধ্যে সামান্য পরিমাণ এডিস ইজিপ্টাইয়ের লার্ভা পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শনিবার নতুন করে রাজ্যে ৩৪১ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে চলতি মরসুমে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯৪৮।