ডেঙ্গি-ক্ষোভ: কলকাতা পুরসভার সামনে কংগ্রেস কর্মীরা। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ।
ফের জ্বরে ভুগে মৃত্যু দেগঙ্গায়। মৃতের নাম আনিসুর রহমান (২৫)। শুক্রবার রাতে মারা যান তিনি।
দিন কয়েক আগে জ্বর নিয়ে হাড়োয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলেন দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রামের আনিসুর। চিকিৎসকেরা ওষুধ দেন। কিন্তু জ্বর কমেনি। তাঁকে বারাসতের এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান ওই যুবক।
গত দু’মাসে এই নিয়ে দেগঙ্গায় বহু মানুষের মৃত্যু ঘটল। বসিরহাট, বাদুড়িয়া, স্বরূপনগর, গাইঘাটা, হাবরাতেও জ্বরে ভুগে মৃত্যু ঘটেছে। উত্তর ২৪ পরগনা লাগোয়া নদিয়ার নগরউখড়া, কাষ্ঠডাঙা, সিলিন্দা, উত্তর ও দক্ষিণ চান্দা, বয়ারমারি–সহ নানা এলাকাতেও জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। উত্তর চান্দায় এক কলেজপড়ুয়ার মৃত্যু ঘটেছে। স্থানীয় মানুষের দাবি, বাইরের ল্যাবে পরীক্ষা করিয়ে অনেকেরই রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলছে। কিন্তু সে কথা মানতে চাইছে না স্বাস্থ্য দফতর।
হাসপাতালগুলি উপচে পড়ছে রোগীর ভিড়ে। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি নিয়ে তথ্য গোপন করা হচ্ছে, ডেঙ্গিকে ‘অজানা জ্বর’ বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে শনিবার বসিরহাট জেলা হাসপাতালের শ্যামল হালদারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে কংগ্রেস। শ্যামলবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘তথ্য গোপনের প্রশ্নই ওঠে না। তিনশোর বেশি মানুষের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কারও ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়নি।’’ তাঁর বক্তব্য, কেউ কেউ ভূল জায়গা থেকে রক্ত পরীক্ষা করানোয় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
স্বাস্থ্যকর্তারা যা-ই বলুন না কেন, জ্বরে আক্রান্ত বিভিন্ন এলাকার মানুষের বক্তব্য, মশা মারা হচ্ছে না। জঙ্গল সাফাইয়ের কাজ শিকেয়। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব বেশির ভাগ জায়গায়। অন্য জায়গা থেকে চিকিৎসক এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া দরকার। শনিবার বসিরহাট, হাবরা, দেগঙ্গা, বারাসতের হাসপাতালগুলিতে দেখা গিয়েছে, রোগীর ভিড়ে দমচাপা অবস্থা।
তবে কিছু স্বাস্থ্য শিবির শুরু হয়েছে। শুক্রবার হাবরার মারাকপুর ও কুমড়ায় শিবির হলেও চিকিৎসক ছিলেন মাত্র এক জন। এ দিন সেখানে দু’জন করে চিকিৎসক রাখা হয়েছিল।
শুক্রবার এই দুই জায়গায় রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। তবে এ দিন সেই কাজ কিছুটা হলেও এগিয়েছে।
হাবরা ১ বিডিও শুভ্র নন্দী বলেন, ‘‘দু’টি শিবিরে ২০০টি করে রক্ত পরীক্ষার কিট পাঠানো হয়েছিল। সোমবার রিপোর্ট পাওয়া যাবে। যাঁদের রক্তে ডেঙ্গি পজেটিভ মিলবে, তাঁদের শনাক্ত করে উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।’’ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, রিপোর্ট পাওয়ার আগে যদি ভাল-মন্দ কিছু ঘটে যায়, তার দায়িত্ব কে নেবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy