গ্যাস উত্তোলক সংস্থার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
বেসরকারি গ্যাস উত্তোলক সংস্থার শ্রমিক-সমস্যা দ্রুত মেটাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনের জেরে যেন শিল্প সংস্থা সমস্যায় না পড়ে, দিয়েছিলেন সেই বার্তাও। তার পরে বারো দিন কেটে গেলেও সমস্যা মেটেনি। উল্টে, মঙ্গলবার তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের পতাকা নিয়ে আসানসোলে ওই সংস্থার কার্যালয়ের সামনে ফের শুরু হল অবস্থান-বিক্ষোভ।
কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া ২৯ জন ঠিকা নিরাপত্তরক্ষীকে পুনর্বহালের দাবিতে এই বিক্ষোভ চলছে। নেতৃত্বে রয়েছেন আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ (সাফাই) তৃণমূলের লক্ষ্মণ ঠাকুর। মুখ্যমন্ত্রী এই সমস্যা মেটানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী তথা আসানসোলের বিধায়ক মলয় ঘটককে। এ দিন মলয়বাবু বলেন, ‘‘আমরা ওই সংস্থার জিএমের সঙ্গে বৈঠকে বসেছি। সংস্থা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই ২৯ জনকে পুনর্বহাল করা সম্ভব নয়। বিকল্প হিসেবে তাঁরা যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করা হয়েছে। দাবি না মেটা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’’
কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে জানুয়ারিতে ওই রক্ষীদের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকেই দফায়-দফায় আন্দোলন চলছে। তার জেরে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে সংস্থা সূত্রের দাবি। ১৩ ফেব্রুয়ারি দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘শিল্প বন্ধ হবে, এটা আমি চাই না। যারা এটা করবে তাদের প্রতি আমার কোনও সমর্থন নেই।’’ শ্রমমন্ত্রীকে তিন দিনের মধ্যে সব পক্ষকে নিয়ে বসে সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেন তিনি।
১৬ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসন, শ্রমিকদের প্রতিনিধি ও সংস্থার কর্তৃপক্ষকে নিয়ে শ্রমমন্ত্রী বৈঠক করেন। কিন্তু সেখানে কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। আরও বৈঠক করে বিষয়টির সমাধান করা হবে বলে সে দিন আশ্বাস দেন তিনি।
কিন্তু আর কোনও বৈঠকের আগেই মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে আসানসোলের কল্যাণপুর শিল্পতালুকে ওই সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের সামনে আইএনটিটিইউসি-র পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। লক্ষ্মণবাবুর অভিযোগ, ‘‘মিথ্যা অভিযোগে ২৯ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। তাঁদের পাওনাও মেটানো হয়নি। সংস্থার ক্ষতি আমরা চাই না। মলয়বাবুকে জানিয়েই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’
গ্যাস সংস্থাটির তরফে অবশ্য আগেই দাবি করা হয়েছে, ওই রক্ষীরা সংস্থার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছেন। তাঁদের পুনর্বহালের প্রশ্ন নেই। এ দিন সংস্থার তরফে প্রশাসনের কাছে আইন-শৃঙ্খলার যাতে অবনতি না হয়, তা দেখার আবেদন জানানো হয়েছে। দুপুরে কার্যালয়ে ঢোকার মুখে সংস্থার আধিকারিক শুভঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়ও করেন। মহকুমাশাসক (আসানসোল) দেবজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সংস্থার যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy