বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে এক তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে, কুপিয়ে খুন করল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার সকালে ক্যানিংয়ের ধর্মতলার ঢোসাহাট বাজার এলাকায় ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায়। নিহতের নাম মণিরুল সর্দার (৪০)। তাঁর বাড়ি ওই এলাকাতেই। তৃণমূলের অভিযোগ, এসইউসি-র আশ্রিত সমাজবিরোধীরাই এই খুন করেছে। এসইউসি অভিযোগ মানেনি।
পুলিশ জানায়, নিহত মণিরুলের বিরুদ্ধে ক্যানিং ও বারুইপুরে কয়েকটি খুন, ধর্ষণ, ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। গত বছর ঢোসাহাটের এসইউসি কর্মী ছিদ্দিক সর্দার খুনের ঘটনাতেও তিনি অভিযুক্ত। পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে তাঁকে খুন করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুনের কারণ নিয়ে অন্ধকারে নিহতের পরিবারের লোকজনও।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন মোটরবাইকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে একটি বিয়েবাড়ি থেকে ফিরছিলেন মণিরুল। ঢোসাহাট বাজারে স্ত্রী-সন্তানকে নামিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলে মোটরবাইক রেখে একটি দোকানের বেঞ্চে বসেন। কিছু ক্ষণের মধ্যে দোকানের সামনে একটি গাড়ি এসে থামে। চার দুষ্কৃতী গাড়ি থেকে নেমে মণিরুলকে লক্ষ করে গুলি করে। একটি গুলি মণিরুলের বুকে লাগে। তিনি লুটিয়ে পড়লে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। তাঁর ধড়-মুণ্ড আলাদা করে দিয়ে দুষ্কৃতীরা গাড়িতে উঠে চম্পট দেয়। গুলির শব্দে বাজারের লোকজন দিশাহারা হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। তত ক্ষণে ঘটনাস্থলে চলে আসেন ক্যানিং-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শৈবাল লাহিড়ী-সহ দলের আরও কয়েক জন নেতা।
নিহতের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বিবি বলেন, “বাড়ি ঢুকতেই বাজারের দিক থেকে গুলির আওয়াজ পাই। তার পরেই জানতে পারি ওকে খুন করা হয়েছে। কারা খুন করেছে বলতে পারব না। স্বামী মাঝেমধ্যেই বলত, ওকে খুন করা হতে পারে। সেটাই হল।”
মনিরুলের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে তৃণমূল নেতা শৈবাল লাহিড়ী বলেন, “বিরোধী দলের লোকজন ওঁকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসায়। মণিরুল আমাদের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। ওই এলাকায় দলের দায়িত্ব সামলাতেন। এলাকা দখল করতে এসইউসি-র গুন্ডারাই পরিকল্পিত ভাবে ওকে খুন করেছে।” অভিযোগ উড়িয়ে এসইউসি-র জয়নগর কেন্দ্রের প্রার্থী তরুণ মণ্ডল বলেন, “এই খুনের সঙ্গে আমাদের দল কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। মণিরুল অপরাধমূলক কাজে যুক্ত ছিলেন। মনে হয় পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে ওঁকে খুন করা হল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy