পুলিশের হেফাজতে উদ্ধার হওয়া মালপত্র। —নিজস্ব চিত্র।
ভিড়ে ঠাসা রাস্তায় আচমকা লাইটপোস্টে ধাক্কা মারল একটি গাড়ি। তার পরেই গাড়ির দরজা খুলে চম্পট দিল দুই যুবক। তৃতীয় জন পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে গেল পুলিশের হাতে। ধৃতের নাম অভিজিৎ ঘোষ। সে লিলুয়া পঞ্চাননতলার বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার ভরদুপুরে লিলুয়া স্টেশন রোডের ওই ঘটনায় যথারীতি আতঙ্ক ছড়িয়েছিল পথচলতি মানুষদের মধ্যে। পরে জানা গেল, ফিল্মি কায়দায় আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লিলুয়ার এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে তাঁর থেকে রুপো লুঠের পরিকল্পনা করেছিল ওই তিন যুবক। পুলিশ জানায়, সঞ্জয় দিঘে নামে ওই ব্যবসায়ী বড়বাজার থেকে কাঁচা রুপো নিয়ে এসে লিলুয়া পটুয়া পাড়ায় তাঁর কারখানায় রুপোর স্টিক ও বাট তৈরির কাজ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর সওয়া ১টা নাগাদ তিনি নিজের গাড়িতে বড়বাজারে যাচ্ছিলেন। বাট ও স্টিক মিলিয়ে তাঁর সঙ্গে ছিল প্রায় ৭ কেজি রুপো। অভিযোগ, কারখানা থেকে বেরিয়ে কিছুটা যাওয়ার পরেই তিনি দেখেন, রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে তিন যুবক। সঞ্জয়বাবুর চালক দীপক বারবার হর্ন দিলেও সরেনি তারা। তার পরে আচমকাই গাড়ির সামনে এসে দরজা খুলে চালকের পাশে এক জন ও সঞ্জয়বাবুর পাশে দুই যুবক উঠে পড়ে।
পুলিশকে ওই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, গাড়িতে দুই যুবক ওঠার পরেই তিনি দেখতে পান, এক জনের কাছে পিস্তল আছে। তা দেখেই তিনি কোনও মতে গাড়ির বাঁ দিকের দরজা খুলে নেমে পড়েন। অন্য দিকে, দীপকের কোমরে পিস্তল ঠেকিয়ে তাঁকে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে যেতে বলে দুষ্কৃতীরা। গাড়িটি লিলুয়া সেতুর দিকে চলে গেলে সঞ্জয়বাবু একটি মোটরবাইকের পিছনে চেপে ওই গাড়িটিকে ধাওয়া করেন। বাইকে যেতে যেতেই তিনি লিলুয়া থানার ওসিকে ফোন করে সব জানান। খবর পেয়ে পুলিশও মোটরবাইক নিয়ে ধাওয়া করে। এর মধ্যে গাড়িটি লিলুয়া রেল সেতু পার করে লিলুয়া স্টেশন রোডে যানজটে আটকে পড়ে।
সঞ্জয়বাবু বলেন, “আমি মোটরবাইকটি নিয়ে গাড়ির পাশে চলে আসি। তার পরে চালকের দরজা খুলে নিজেই স্টিয়ারিংটা ঘুরিয়ে দিই। গাড়িটি যেহেতু চলন্ত অবস্থায় ছিল, তাই স্টিয়ারিং ঘোরাতেই রাস্তার পাশের লাইটপোস্টে ধাক্কা মারে।” ভিড় রাস্তায় গাড়ি আটকে যেতেই দুই যুবক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চম্পট দেয়। তবে অভিজিৎ ধরা পড়ে যায় পুলিশের হাতে। উদ্ধার হয় একটি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, একটি বোমা, সঙ্গে সাত কেজি রুপো।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) রশিদমুনির খান বলেন, “উত্তরপাড়ার কয়েক জন দুষ্কৃতীকে সঙ্গে নিয়ে এই লুঠের পরিকল্পনা করে অভিজিৎ। বাকিদের খোঁজ চলছে।” অভিজিৎ আগে হুগলির ‘ত্রাস’ হুব্বা শ্যামলের হয়ে কাজ করত। এ দিন সঞ্জয় গাড়ি থেকে নেমে যাওয়ার পরে ওই দুষ্কৃতীরা অবশ্য গাড়িটাও লুঠের মতলব করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy