লোকসভা ভোটের আগে কখনও সিপিএমকে ‘বিষাক্ত সাপে’র সঙ্গে তুলনা, কখনও বা দলীয় কর্মীদের সিপিএমের সঙ্গে কোনওরকম সংস্রব না রাখার জন্য পরামর্শ দিতে শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। ভোটে জেতার পরে আবার তিনিই উদার। শুক্রবার রাতে হাবরার আইএনটিইউসি ও সিটু অফিসে তালা লাগিয়ে দেওয়ার পরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের শনিবার সন্ধেয় সেই তালা খুলে নিজেদের দলীয় পতাকা সরিয়ে নিতে হল মন্ত্রীরই নির্দেশে।
শুক্রবার বারাসত লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের জয়ের পরে রাত ৯টা নাগাদ হাবরা স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আইএনটিইউসির অফিসে বেশ কিছু লোক চড়াও হয়ে ভাঙচুর করে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দেয়। ওই একই অফিস থেকে কংগ্রেসেরও কাজকর্ম হত। স্টেশন সংলগ্ন এলাকা ও হাবরা থানার পাশে সিটুর মোট তিনটি কার্যালয়ে তালা দিয়ে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দেয় তারা। সব ক্ষেত্রে অভিযোগের তির ওঠে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকের দিকে। রাতেই খবর পৌঁছয় তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে।
জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরে জ্যোতিপ্রিয় দলের হাবরা নেতৃত্বকে সরাসরি জানিয়ে দেন, এমন ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। শনিবার দুপুরে তাঁর নির্দেশে হাবরা পুরসভার চেয়ারম্যান সুবীন ঘোষ, ভাইস চেয়ারম্যান নীলিমেশ দাস সিটু ও আইএনটিউসির প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ডেকে এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। সন্ধ্যায় তাঁরা সিটুর তিনটি পার্টি অফিসে গিয়ে তালা খুলে দলীয় পতাকা সরিয়ে নেন। হাবরা প্ল্যাটফর্মে আইএনটিইউসি অফিসে গিয়েও দলীয় পতাকা খুলে নেন তাঁরা। ভাঙচুর হওয়া জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করে দ্রুত সেগুলি কিনে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন। এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “কমিটি তৈরি করে তদন্ত শুরু করেছে দল। আমাদের কেউ ঘটনায় যুক্ত থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তাঁর আরও সংযোজন, “ভোটে জিতেছি বলে আমাদের অনেক বেশি নমনীয় হতে হবে। আমাদের শান্ত থাকতে বলেছেন নেত্রী। রাজনৈতিক লড়াই থাকতে পারে। কিন্তু বিরোধীদের পার্টি অফিস দখল করায় আমরা বিশ্বাসী নই।” এই ঘটনায় কংগ্রেসের জেলার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সমাদ্দারের প্রতিক্রিয়া, “আবেগের বশে তৃণমূলের লোকেরা ওই ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছিল। তবে পরে ওরা রাজনৈতিক সুস্থতার পরিচয় দিয়েছে।” হাবরার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক প্রণব ভট্টাচার্য বলেন, “ঘটনার পরে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে সুবিবেচনার কথা বলেছিলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy