কেনার কয়েক দিনের মধ্যেই কাজ করছিল না নতুন মোবাইল। কিছুতেই সেটি সারিয়ে দিচ্ছিলেন না দোকানদার। হাজার অনুরোধ-উপরোধেও কাজ হয়নি। এই অবস্থায় মুশকিল আসান হয়ে দাঁড়াল ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। আদালতের নির্দেশে নতুন মোবাইল হাতে পেলেন শেওড়াফুলির খোন্দকারপাড়া বাসিন্দা অনিতা ওরফে অমিতা কুণ্ডু নামে ওই ক্রেতা। সঙ্গে ক্ষতিপূরণ।
গত বছরের ২২ জুন অমিতাদেবী শ্রীরামপুরের মানিকতলার একটি শোরুম থেকে ৪ হাজার ৯৫০ টাকা দিয়ে একটি মোবাইল কেনেন। তাঁর অভিযোগ, কয়েক দিনের মধ্যেই মোবাইলের ‘টাচ স্ক্রিন’ খারাপ হয়ে যায়। শোরুমে গিয়ে মোবাইলটি ঠিক করতে দেন ওই মহিলা। প্রাথমিক ভাবে সেটি সারিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছু হয়নি। উল্টে মাস খানেকের মধ্যে মোবাইলটি পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়। তখন ফের মোবাইল নিয়ে শোরুমে যান ওই মহিলা। সেটি সারিয়ে দিতে অথবা বদলে দিতে বলেন। কিন্তু শোরুম কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করেননি। যদিও, মোবাইল সেটটি খারাপ হলে এক বছর নিখরচায় সারিয়ে দেওয়ার (ওয়্যারেন্টি) কথা ছিল। আতান্তরে পড়ে প্রথমে ওই শোরুম কর্তৃপক্ষের কাছে আইনি চিঠি পাঠান অনিতাদেবী। তাতেও কাজ না হওয়ায় গত ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন।
আদালত ওই শোরুম কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠান। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনেন আদালতের প্রধান বিচারক নারায়ণচন্দ্র চক্রবর্তী। আদালত মনে করে, বর্তমানে মোবাইল একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। প্রতিদিনই তা কাজে লাগে। কেনার পরেই মোবাইলটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় এক দিকে সমস্যায় পড়েছেন ওই ক্রেতা।
তার উপর, সেটি সারাই অথবা বদল না করে চুক্তিভঙ্গ করেছেন ওই শোরুমের কর্তৃপক্ষ। ফলে ক্রেতা যেমন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন, তেমনি বিনা দোষে হয়রানি এবং মানসিক যন্ত্রণারও শিকার হয়েছেন। আদালতের বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রেই দোকানদারেরা ক্রেতার কথা গুরুত্ব দেন না। ক্রেতা তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু করতেও পারেন না। নিরুপায় হলে তাঁরা হাল ছেড়ে দেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্য তেমনটা হয়নি। ক্রেতার অধিকার বুঝে নিতে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন।
বিচারক ওই শোরুম কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, বিকল মোবাইল সেটটির বদলে একই মডেলের নতুন একটি ফোন দিতে হবে এক বছরের ওয়্যারেন্টি-সহ। পাশাপাশি, ওই ক্রেতার মানসিক যন্ত্রণা এবং হয়রানির জন্য ৮০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
আদালতের নির্দেশ মেনে নেন ওই শোরুম কর্তৃপক্ষ। গত ৭ মার্চ চুঁচুড়ায় আদালতে এসে নতুন একটি মোবাইল এবং ক্ষতিপূরণের টাকা ওই মহিলার হাতে তুলে দেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy