Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

চাল ভেঙেছে বহু বাড়ির, শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি আম, সব্জির

কিছুক্ষণ আগে থেকেই ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। হঠাই শুরু হল প্রবল বেগে বৃষ্টি। সেই সঙ্গে গোলার বেগে পড়তে থাকে শিলের টুকরো। মূহূর্তের মধ্যে কয়েকটা টালির টুকরো ভেঙে পড়ে। ছাদের অ্যাসবেস্টস ভেঙে যায় শিলের টুকরোয়।

ভেঙেছে ঘরের টালির চাল।—নিজস্ব চিত্র।

ভেঙেছে ঘরের টালির চাল।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৪ ২৩:৫৩
Share: Save:

কিছুক্ষণ আগে থেকেই ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। হঠাই শুরু হল প্রবল বেগে বৃষ্টি। সেই সঙ্গে গোলার বেগে পড়তে থাকে শিলের টুকরো। মূহূর্তের মধ্যে কয়েকটা টালির টুকরো ভেঙে পড়ে। ছাদের অ্যাসবেস্টস ভেঙে যায় শিলের টুকরোয়। শনিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ শিলাবৃষ্টিতে এমন অবস্থা দেখে মাথা বাঁচাতে ঘরের মধ্যে ছোটাছুটি শুরু করে দেন ব্যারাকপুরের কাকিনাড়ার বাসিন্দা বিশ্বজিত্‌ শীল ও সীমাদেবী। নিজেরা বালিশ মাথায় করে শিলের আঘাত আটকালেও ৬ বছরের মেয়েকে বাঁচাতে তাকে স্টিলের আলমারিতে ঢুকিয়ে দেন। রবিবার আগের রাতের শিলাবৃষ্টির অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই কেঁপে উঠছিলেন ওই দম্পতি। শিলাবৃষ্টিতে ঘর-বাড়ি থেকে মাঠের ফসলেরও ভাল রকম ক্ষতি হয়েছে বারাসত মহকুমাতেও। বারাসতের কদম্বগাছি, শাসন, সর্দারহাটি, দেগঙ্গা ব্লকের চাঁপাতলা, গোঁসাইপুর, গাঙনিয়া, গাঙধুলাট, পণ্ডিতপোল, পারুলিয়া, মৌলপোতা, হাঁসিয়া, দোগাছিয়া, হোসেনপুর-সহ বেশ কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে ঘরের চাল ভেঙেছে। নষ্ট হয়েছে প্রচুর আমের মুকুল। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, “গত রাতে প্রবল ঝড় ও সেই সঙ্গে শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জেলার দেগঙ্গা, বারাসত, ব্যারাকপুর, ভাটপাড়া, শ্যামনগর, জগদ্দলের বিস্তীর্ণ এলাকা। আমরা কয়েকটি এলাকায় ঘুরেছি। বেশ কিছু বাড়ির চাল ভেঙেছে। ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ জানতে ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার বিডিওদের বলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, শনিবার রাতের শিলাবৃষ্টিতে প্রায় দেড় হাজারের উপর বাড়ি, কয়েকশো একর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আম-কাঁঠাল থেকে শুরু করে বেগুন, পটল, কুমড়ো, পেঁপে, ধানের ক্ষতি হয়েছে। মাথায় শিল পড়ে কমবেশি ২০ জন জখম হয়েছেন। অবিলম্বে পলিথিন এবং শুকনো খাবারের দাবিতে রবিবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শ্যামনগর ও জগদ্দলের মধ্যে কল্যাণী হাইওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষ। দেগঙ্গার গোসাঁইপুর গ্রামের আবুল কাশেম বলেন, “পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আমবাগান কিনেছিলাম। শিলাবৃষ্টিতে আমের সব গুঁটি মাটিতে মিশে গিয়েছে। গাঙধুলাট গ্রামের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া মামণি খাতুন এবং কামরান হোসেনের কথায়, “প্রায় এক কিলো ওজনের শিল পড়ায় ঘরের টালির চাল ভেঙে পড়ে। মাথা বাঁচাতে বাড়ির সবাই মিলে খাটের তলায় ঢুকে আশ্রয় নিই। বই-খাতা সব জলে ভিজে গিয়েছে। কী ভাবে পরীক্ষা দেব জানি না।” দেগঙ্গার ব্লকের কৃষি আধিকারিক দীপক কুমার বিশ্বাস বলেন, “ঠিক কত বিঘা জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে তা জনতে কৃষি প্রযুক্তি সহায়কদের গ্রামে গ্রামে পাঠানো হয়েছে। তবে শিলাবৃষ্টিতে আম, ধান-সহ সব্জির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

hail storm damaged vegetables
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE