কর্মীসভায় দলে যোগদানকারীদের হাতে পতাকা তুলে দিচ্ছেন কাজী আব্দুল গফ্ফর ও অসিত মজুমদার। ছবি: নির্মল বসু।
জেলায় কংগ্রেসে তাঁদের ‘দ্বন্দ্ব’ সর্বজনবিদিত। কিন্তু জোটহীন তৃণমূলকে হারাতে হলে এবং দলের অস্তিত্বকে মজবুত করতে হলে দ্বন্দ্ব ভুলে যে তাঁদের একসঙ্গে নির্বাচনের ময়দানে ঝাঁপাতে হবে তা বুঝেছেন দু’জনেই। আর তাঁদের সেই বোধোদয়েরই ফল দেখা গেল বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে রবীন্দ্রভবনে কংগ্রেসের কর্মীসভায়। জেলা কংগ্রেসের সভাপতি (গ্রামীণ) অসিত মজুমদার এবং জেলার একমাত্র বিধায়ক বাদুড়িয়ার কাজী আব্দুল গফ্ফরকে এ দিন দেখা গেল এক মঞ্চে থেকে অতীতের সমস্ত রাগ-অভিমান ভুলে নির্বাচন ‘যুদ্ধ’ জিততে সঙ্কল্প নিতে।
প্রসঙ্গত, দুই শিবিরের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিলই। তা আরও বাড়ে লোকসভা নির্বাচনে কাকে কংগ্রেসের প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে। প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী প্রার্থী হিসাবে কাজী আব্দুল গফ্ফরের ছেলে কাজী আব্দুল রহিম (দিলু)-এর নাম প্রস্তাব করলে অসিতবাবু বলেছিলেন, “জেলা কংগ্রেসের ঠিক করা তিনজন প্রার্থীর মধ্যে কাউকে প্রার্থী করা না হলে আমি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হব।” অসিতবাবুর এ হেন আপত্তির কারণ ছিল তাঁর ঠিক করা প্রার্থীদের মধ্যে দিলুর নাম না থাকা। কিন্তু অসিতবাবুর ‘হুমকি’কে পাত্তা না দিয়ে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে দিলুর নামই ঘোষণা করে। এতে দুই শিবিরের দ্বন্দ্ব আরও চরমে ওঠে। কিন্তু প্রার্থী নিয়ে হাইকমান্ডের অবস্থান কঠোর হওয়ায় বিবদমান দুই গোষ্ঠীই ক্রমে সুর নরম করে ফেলে। হাইকমান্ডের কথা না শুনলে ফল যে ভাল হবে না তা বুঝতে পেরে দু’পক্ষেই ‘রাগ-অভিমান’ ভুলে পরস্পরের কাছে আসার তদ্বির শুরু করে। পাশাপাশি এর ফলে তৃণমূল সুবিধা পেয়ে যেতে পারে বলেও মনে হয় দু’পক্ষের। তারই পরিণতিতে এ দিন রবীন্দ্রভবনের কর্মীসভায় উপচে পড়া দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে নিজেদের দ্বন্দ্ব ভুলে এক হয়ে যায় দুই শিবির। কর্মীসভাতেই এ দিন প্রায় শতাধিক তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএম কর্মী কংগ্রেসে যোগ দেন। তাঁদের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন কাজী আব্দুল গফ্ফর ও অসিতবাবু।
সভার শেষে কংগ্রেস প্রার্থী দিলুর বক্তব্য, “কর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে আমি অভিভূত। কংগ্রেসের সংঘবদ্ধ লড়াইয়ে নির্বাচনে জেতার ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy