Advertisement
১৬ জুন ২০২৪

জয়েন্টে স্থান, ডাক্তারি পড়ায় কাঁটা অভাব

কষ্ট করে রোজগার করে ছেলেকে ডাক্তার করে তোলার স্বপ্ন ছিল বাবা-মার। জয়েন্ট এন্ট্রান্সে মেডিক্যালে মেডিক্যালে ৬৮০ পেয়ে রাজ্যে ১৯ র্যাঙ্ক করেছে হাওড়া সাঁকরাইলের জেলেপাড়ার বাসিন্দা কুণাল বোল। ডাক্তারি পড়ায় আর কোনও বাধা নেই। কিন্তু পড়ার খরচ আসবে কোথা থেকে তাই নিয়েই দুশ্চিন্তায় তার পরিবার।

বাড়িতে মায়ের সঙ্গে কুণাল। নিজস্ব চিত্র।

বাড়িতে মায়ের সঙ্গে কুণাল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৪ ০১:১৩
Share: Save:

কষ্ট করে রোজগার করে ছেলেকে ডাক্তার করে তোলার স্বপ্ন ছিল বাবা-মার। জয়েন্ট এন্ট্রান্সে মেডিক্যালে মেডিক্যালে ৬৮০ পেয়ে রাজ্যে ১৯ র্যাঙ্ক করেছে হাওড়া সাঁকরাইলের জেলেপাড়ার বাসিন্দা কুণাল বোল। ডাক্তারি পড়ায় আর কোনও বাধা নেই। কিন্তু পড়ার খরচ আসবে কোথা থেকে তাই নিয়েই দুশ্চিন্তায় তার পরিবার।

মা রেখাদেবী দর্জির কাজ করেন। বাবা পবনকুমার বোল ধীবরের কাজ করে কোনওরকমে দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালান। এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকে অভয়চরণ হাইস্কুল থেকে পাঁচটি বিষয়ে লেটার নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে ৪৫৯ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে কুণাল। বাংলায় ৮৭, ইংরেজিতে ৯০, জীববিজ্ঞানে ৯৬, রসায়নে ৯৪, পদার্থবিদ্যায় ৯০ ও গণিতে ৯২ পেয়েছে। তাতে আনন্দে আত্মহারা হয়েছিলেন মা। জয়েন্টেও ছেলের এত ভাল রেজাল্ট দেখে চোখ দিয়ে আনন্দের জল গড়িয়ে পড়ে। তার সঙ্গে ভবিষ্যতের চিন্তা, এ বার হয়তো কাজের অর্ডার আরও বেশি নিতে হবে। ডাক্তারি পড়ানোর খরচ যে অনেক। কুণালকে জড়িয়ে ধরে বলেন, “যত কষ্টই হোক, তোকে ডাক্তারি পড়াব।”

ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক লোচনচন্দ্র মাঝি বলেন, “কুণাল খুবই ভাল ছেলে। ক্লাসে প্রতি বছরই প্রথম হোত। ২০১২ সালের মাধ্যমিকে কোনও ৬৫৮ পেয়ে স্কুলের মুখ উজ্জ্বল করেছিল। এ বারেও উচ্চমাধ্যমিকে এত দরিদ্র পরিবারের ছেলে। বাবা কোনও রকমে সংসার চালান। স্কুলের শিক্ষকেরা কুণালকে যথেষ্টা সাহায্য করেছেন। আমিও স্কুলে যতটুকু ফ্রি করে দেওয়া সম্ভব, করেছি।”

চোখে মোটা লেন্সের চশমা, শ্যামবর্ণের মাঝারি চেহারা অভয়চরণ হাইস্কুলের ছাত্র কুণাল বলেন, “পড়াশোনার ব্যাপারে আমাদের স্কুলের শিক্ষকদের কাছে আমি সবসময়ে সাহায্য পেয়েছি। পড়াশোনা ছাড়াও ছবি আঁকতে ভালবাসি। তবে পড়াশোনার বাইরে অন্য কিছু করার সময় পাই খুবই কম।”

কিন্তু এত ভাল রেজাল্টের পরেও কি স্বপ্ন ছুঁতে পারবে কুণাল, সেই প্রশ্নই কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে গোটা পরিবারকে।

কুণালের মা রেখাদেবী বলেন, “ডাক্তারি পড়াতে প্রচুর খরচ। তাই বিভিন্ন জায়গায় একটু বেশি অর্ডার নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি চাই ও ডাক্তারি পড়ে গ্রামের মানুষদের চিকিৎসা করে প্রতিষ্ঠিত হোক।” পবনবাবু বললেন, “যদি কোনও সহৃদয় ব্যক্তি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন, তা সসম্মানে গ্রহণ করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sakrail kunal bole joint entrance exam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE