তৈরি হয়েছে একটি মাত্র ট্যাঙ্ক।—নিজস্ব চিত্র।
নদীর জল শোধন করে ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ড-সহ বেশ কিছু এলাকায় জল সরবরাহের জন্য প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৮-০৯ আর্থিক বছরে। কিন্তু প্রায় পাঁচ বছর কেটে গেলেও এখনও শেষ হল না প্রকল্পের কাজ। ফলে গ্রীষ্মের শুরুতে ফের সমস্যা দেখা দিচ্ছে ওই এলাকার। ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, “পুরভোটের মুখে পাইপ লাইনে জল সরবরাহ করার কথা সব দলই বলেছিল। কিন্তু ভোট হয়ে যাওয়ার পরেও আবার একই অবস্থা।” কবে ওই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলতে পারছেন না পুরকর্তারাও।
ডায়মন্ডহারবার পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডে বর্তমানে প্রায় এক লক্ষ মানুষ বাস করেন। ২০০৮-০৯ আর্থিক বছরে জওহরলাল জাতীয় মিশন নবীকরণ মিশন প্রকল্পের অধীনে শহরের পরিকাঠামো উন্নয়নে ‘ছোট বাজেট মাঝারি শহর প্রকল্পে’র প্রায় ৩৫ কোটি টাকা অনুমোদন হয়। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রামরামপুরে ডায়মন্ড হারবার ফকিরচাঁদ কলেজের পিছনে হুগলি নদী লাগোয়া সেচ দফতরের প্রায় ২০ বিঘা জমিতে ২০০৯ সালে ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তিনটি ট্যাঙ্ক তৈরির কথা বলা হয়েছিল। ভাবনা ছিল, নদী থেকে জল শোধন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে তা পাঠানো হবে ট্যাঙ্কে। সেখান থেকে পাইপ লাইনের সাহায্যে তা পুর এলাকা ও সংলগ্ন বেশ কিছু পঞ্চায়েত এলাকায় পাঠানো হবে। কিন্তু কার্যত ট্যাঙ্ক তৈরি হয়েছে একটি। ভবন নির্মাণ অবশ্য হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পাইপলাইন বসানোর কাজও সেভাবে এগোয়নি।
ফলত অধিকাংশ ওয়ার্ডে পানীয় জলের জন্য লম্বা লাইন পড়েছে। অধিকাংশ ট্যাপ কল থেকে সরু হয়ে জল পড়ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শীতের মরসুমে পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানেও জল নেই। গরম কালে জলের সমস্যা আরও বাড়বে।
পুরসভা সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত নদী থেকে জল তোলার ইনটেক পয়েন্টের কাজই শুরু করা যায়নি। পুর সূত্রে জানানো হয়েছে, নিউ টাউনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল মাঠে রিজার্ভার ট্যাঙ্ক তৈরির কাজ শেষ। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে দক্ষিণ হাজিপুরে কাজ শুরু করা হয়েছে। ধনবেড়িয়ার ৯ নম্বরে ট্যাঙ্ক তৈরির জমি না মেলায় সমস্যা হচ্ছিল। এখন জমি মেলায় দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এত দিনেও এই কাজগুলো করা গেল না কেন? পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, হুগলি নদী লাগোয়া ওই জমি পোর্ট ট্রাস্টের আওতায় পড়ায় প্রথমে তা পেতে সমস্যা হয়। পরে অনুমোদন মিললেও ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। যদিও পরে ওই সমস্যা মিটেছে। উপ-পুরপ্রধান পান্নালাল হালদার বলেন, “প্রকল্পের জমি পেতেও অনেক সময় লেগেছিল। যে টাকা অনুমোদিত হয়েছিল, সেই টাকার মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ নিয়েও সমস্যা তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে অবশ্য রাজ্য সরকার প্রয়োজন মতো অর্থ বরাদ্দ করেছে। কয়েক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy