Advertisement
১০ জুন ২০২৪

প্রশাসনের উদ্যোগে চলল বাস, নিশ্চিন্ত পরীক্ষার্থীরা

মারধরের অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে আরামবাগ-সামতা রোডের ২৪ নম্বর রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন বাসকর্মীরা। তার জেরে সমস্যায় পড়েন তিনটি স্কুলের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তাদের পরীক্ষার আসন পড়েছিল ওই রাস্তার উপরেই ডিহিবাগান উচ্চবিদ্যালয়ে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা মহকুমা প্রশাসনের কাছে বিষয়টি জানান। তার পরে মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় ও পুলিশের হস্তক্ষেপে সকাল পৌনে ৯টা থেকে বাস চালান কর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৪ ০৩:২১
Share: Save:

মারধরের অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে আরামবাগ-সামতা রোডের ২৪ নম্বর রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন বাসকর্মীরা। তার জেরে সমস্যায় পড়েন তিনটি স্কুলের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তাদের পরীক্ষার আসন পড়েছিল ওই রাস্তার উপরেই ডিহিবাগান উচ্চবিদ্যালয়ে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা মহকুমা প্রশাসনের কাছে বিষয়টি জানান। তার পরে মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় ও পুলিশের হস্তক্ষেপে সকাল পৌনে ৯টা থেকে বাস চালান কর্মীরা।

মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ আরামবাগের সামতায় ২৪ নম্বর রুটের দু’টি বাসের কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় শেখ কালাম নামে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। তার প্রতিবাদে ও কালামের দৌরাত্ম্যের প্রতিকারের দাবি জানিয়ে বুধবার সকাল থেকে আরামবাগ-সামতা রোডের বাস চলাচল বন্ধ রাখেন বাস কর্মীরা। সকালে থানাতেও অভিযোগ জানান তাঁরা।

এ দিকে, বুধবার, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনের সকালে ওই রাস্তার উপরে ডিহিবাগান উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসন পড়েছিল আশপাশের কাপসিট উচ্চ বিদ্যালয়, গৌরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়, ধামসা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪২২ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। সকালে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের অসুবিধায় পড়ার আশঙ্কা ছিল। এই নিয়ে দিশেহারা ও ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা বুধবার সকালে বিষয়টি পুলিশ ও মহকুমাশাসককে জানান। তাদের হস্তক্ষেপে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়। অরিন্দমবাবু বলেন, “বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাস মালিকদের। বাস কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ পুলিশ খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”

২৪ নম্বর রুটের বাস কর্মচারী সংগঠনের সম্পাদক আশিস চক্রবর্তীর অভিযোগ, “মঙ্গলবার রাতে বাস গ্যারাজ করে আমাদের দু’টি বাসের কর্মীরা রান্না-খাওয়া করছিলেন। সেই সময়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ কালাম কোনও প্ররোচনা ছাড়াই তাদের মারধর করে। বিষয়টি তৃণমূলের উপরতলার নেতৃত্বকে জানিয়েও কিছু হয়নি।” আশিসবাবুর আরও দাবি, সামতায় প্রায়ই তাঁদের কর্মীদের উপর নানা রকম জুলুম হয়। কেউ কেউ বাস ভাড়া দিতে চায় না। কেউ মদ খাওয়ার টাকা চায় চালক ও কর্মীদের কাছে। ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে কালামের দাবি, “বাস চলাচলের নির্দিষ্ট সময় কেন মানা হচ্ছে না, তা নিয়ে বচসা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি চালানোর কথা বলা হয়েছে। মারধর করিনি।” আরান্ডি ১ অঞ্চল তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত উপপ্রধান শ্রীকান্ত ঘোষ বলেন, “মারধর হয়নি বলেই শুনেছি। বাস কর্মচারী সংগঠন, বাস মালিক সংগঠন, স্থানীয় বাসিন্দা এবং অভিযুক্তকে নিয়ে একটি বৈঠকে বসে বিষয়টি মেটানো হবে।”

বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক অনন্ত ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা চাই বাস কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসন সতর্ক হোক। রাজনীতির লোকজনও আমাদের পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করুন।”

পুলিশ-প্রশাসনের তত্‌পরতায় খুশি অভিভাবকেরাও। তাঁদের তরফে কাশীনাথ কুণ্ডু বলেন, “প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিতে যেতে পেরেছে। আশা করব, ভবিষ্যতেও নাগরিক সুবিধার জন্য প্রশাসন এমনটাই ব্যবস্থা নেবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bus students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE