গত কয়েক মাসে শুধু বাস ধরতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। তবুও সাঁতরাগাছি স্টেশন সংলগ্ন কোনা এক্সপ্রেসওয়ের পাশে বিকল্প পথ তৈরির আবেদনে রেল কান দেয়নি। কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা বৃদ্ধির প্রশ্নে এমনই অভিযোগ হাওড়া সিটি পুলিশের।
পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সাঁতরাগাছি স্টেশনের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে যাত্রী-চাপ। কিন্তু স্টেশন চত্বরে পরিবহণ ব্যবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। ট্যাক্সি প্রত্যাখ্যান-সহ নানা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, রাস্তার অভাবে কলকাতার দিক থেকে বা মুম্বই রোড থেকে কোনও গাড়ি সরাসরি স্টেশনে ঢুকতে পারে না। তাই বছর দুই আগে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের এক পাশে রাস্তা ও হাওড়া স্টেশনের মতো প্রিপেড ট্যাক্সি স্ট্যান্ড তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু রেল কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। ফলে যাত্রী-ভোগান্তি এখন রোজনামচা। ট্রেন থেকে নেমে ব্যস্ত কোনা এক্সপ্রেসওয়ের অন্য পারে ট্যাক্সি বা বাস ধরতে যাওয়ার সময়ে প্রায়শই দুর্ঘটনার মুখে পড়ছেন যাত্রীরা।
প্রস্তাবিত বাসস্ট্যান্ড। সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন...
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “যাত্রীদের সমস্যার কথা ভেবেই বছর দু’য়েক আগে থেকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কাছে রাস্তা তৈরির পরিকল্পনার নকশা সমেত চিঠি দিয়ে বার বার আবেদন করেছি। ফল হয়নি।” কমিশনারের দাবি, রেল সাহায্য করলে ওই এলাকায় পথ দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। যানবাহন না পাওয়ার সমস্যাও মিটত।
হাওড়া সিটি পুলিশ জানিয়েছে, রেলের কাছে যে নকশা পেশ করা হয়েছে তাতে দেওয়া পরিকল্পনা অনেকটা এরকম কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে সুন্দরপাড়ার কাট আউট দিয়ে আর বাস ঘোরানো হবে না। বরং কলকাতার দিক থেকে আসার সময়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বাঁ দিকে নতুন রাস্তা তৈরি হলে বাস সেই পথ ধরবে। এর পরে স্টেশন চত্বর থেকে আন্ডারপাস দিয়ে ফের ফিরতি পথে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে উঠবে। এ জন্য সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনের সামনে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরের বাস স্টপেজ সরিয়ে জগাছার দিকের সার্ভিস রোডে নিয়ে যাওয়া হবে। ওই রাস্তার পাশে বাসস্ট্যান্ডও তৈরি করা হবে যাতে পর্যাপ্ত বাস থাকতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে ওই রাস্তায় কিছু অবৈধ দোকান রয়েছে। পুরসভার সাহায্যে সেগুলি সরিয়ে রাস্তা চওড়া করতে হবে। পাশাপাশি আলোকিত করা হবে গোটা এলাকা।
শিবপুরের বাসিন্দা উলুবেড়িয়া-সাঁতরাগাছির এক নিত্যযাত্রী মানিক রায় বলেন, “একটু রাত হলেই স্টেশন চত্বর এমনকি কোনা এক্সপ্রেসওয়েতেও ট্যাক্সি বা বাস কমে যায়। বাড়ি ফিরতে খুব সমস্যা হয়।” নিত্যযাত্রী এবং স্থানীয়দের অভিযোগ, রেল কর্তৃপক্ষ সাঁতরাগাছি স্টেশনকে বহু দূরপাল্লার ট্রেনের প্রান্তিক স্টেশন করেছেন, কিন্তু বেশি রাতে ট্রেন থেকে নেমে যাত্রীরা কী ভাবে গন্তব্যে যাবেন তা ভাবেননি। আরও অভিযোগ, সরকারও পর্যাপ্ত যানবাহনের ব্যবস্থা না করায় যাত্রীদের চরম ভুগতে হচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর শাখার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সাঁতরাগাছি স্টেশন চত্বরের উন্নতি নিয়ে রেলের একটা বড় পরিকল্পনা রয়েছে। সেই কাজ শুরু হলে হাওড়া সিটি পুলিশের প্রস্তাব যতটা সম্ভব বাস্তবায়িত করা যায় সেই চেষ্টা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy