রবিবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়রদের নিয়ে পরিদর্শনে যান কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। ছবি: সুব্রত জানা।
বাগনানের পরে আমতা।
ফের কৃষি ও কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের নির্দেশে হাওড়া জেলায় বন্ধ হল একটি কৃষক-বাজার তৈরির কাজ। নিম্ন মানের ইট-বালি দিয়ে আমতা-১ ব্লকের সিরাজবাটিতে ওই নির্মাণকাজ চলছে এবং তাতে দুর্নীতি হচ্ছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের এই অভিযোগ ছিল। জানতে পেরে রবিবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে নির্মাণকাজ পরিদর্শনে যান অরূপবাবু। নিজে হাতে ইট-বালি পরীক্ষা করেন। তার পরেই ঠিকা সংস্থাকে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
প্রায় একই রকম অভিযোগ পেয়ে দিন পনেরো আগেও হিজলকে বাগনান-১ ব্লকের নির্মীয়মাণ কৃষক-বাজার পরিদর্শনে যান অরূপবাবু। সেখানেও ঠিকা সংস্থাকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে কৃষক-বাজার তৈরি। পাঁচ কোটি টাকায় সরকারি বীজ-খামারে তা তৈরি হওয়ার কথা। হাওড়া জেলায় প্রাথমিক ভাবে পাঁচটি ব্লকে (উদয়নারায়ণপুর, বাগনান-১, আমতা-১, উলুবেড়িয়া-১ এবং শ্যামপুর-১) ওই বাজার তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তার মধ্যে দু’টির ক্ষেত্রে নির্মাণকাজকে কেন্দ্র করে যে ভাবে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাতে ঠিকা সংস্থা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠেছে।
কৃষি বিপণন দফতরের হয়ে রাজ্য জুড়ে কৃষক-বাজার তৈরির দায়িত্বে রয়েছে রাজ্য বিপণন পর্ষদ। কৃষিমন্ত্রীর দাবি, ঠিকা সংস্থা নির্বাচনে অনলাইন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছিল। ফলে, দুর্নীতি বা স্বজন-পোষণের অবকাশ ছিল না। তা হলে নির্মাণকাজের ক্ষেত্রে একের পর এক অভিযোগ উঠছে কেন? মন্ত্রী বলেন, ‘‘ঠিকা সংস্থা নির্বাচনে স্বচ্ছতা নেওয়া হয়েছিল। কাজের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও ছাড়া হবে না। কোথাও ওই অভিযোগ থাকলে আমি নিজে পরিদর্শনে যাচ্ছি। প্রয়োজনে ঠিকা সংস্থার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এ দিন আমতা-১ ব্লকের নির্মীয়মাণ কৃষক-বাজারের জন্য ব্যবহৃত ইট-বালির নমুনাও পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করেন কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকেরা। ওই নমুনা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হবে এবং রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। মন্ত্রীর পরিদর্শন চলাকালীনও স্থানীয় বাসিন্দারা ঠিকা সংস্থার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। অভিযোগ মানেননি ঠিকা সংস্থার কর্তারা।
এর আগে, বাগনান-১ ব্লকের কৃষক-বাজারের জন্য ব্যবহৃত উপকরণের নমুনাও পরীক্ষার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তা নিম্ন মানের ছিল বলে রিপোর্ট এসেছে জানিয়ে কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকেরা বলেন, “আইন মেনে ওই ঠিকা সংস্থাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছি। জবাব পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” পরবর্তী পদক্ষেপ বলতে ওই ঠিকা সংস্থাকে নির্মাণকাজের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে ফের টেন্ডার ডেকে নতুন ঠিকা সংস্থা নির্বাচন করা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তাঁরা।
চাষিরা যাতে তাঁদের উৎপাদিত ফসল সরাসরি খুচরো ব্যবসায়ী এবং সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারেন, সে জন্য কৃষক-বাজার তৈরির পরিকল্পনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে, একদিকে ফড়ে-রাজ বন্ধ হবে এবং অন্য দিকে, সব্জির দাম সধারণ মানুষের আয়ত্ত্যে থাকবে বলে তাঁর আশা। প্রতিটি কৃষক-বাজারে স্টল ছাড়াও নিলামঘর, গুদাম ঘর তৈরির কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy