Advertisement
০৩ মে ২০২৪

রাস্তার জমির জন্য হুমকি তৃণমূল নেতার, অভিযোগ গোসাবায়

গোসাবার বিভিন্ন দ্বীপে পাকা রাস্তা না থাকার সমস্যা দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে কয়েকটি দ্বীপে সেই কাজ শুরু হয়েছে। অন্যত্র কাজ নির্বিঘ্নে চললেও ছোট মোল্লাখালি বাজার থেকে সাতজেলিয়া খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার রাস্তাটি তৈরির জন্য স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার হুমকির মুখে পড়ে কিছু ব্যবসায়ী নিজেদের দোকানঘরের সামনের অংশ ভেঙে দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই রাস্তা ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।—নিজস্ব চিত্র।

এই রাস্তা ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।—নিজস্ব চিত্র।

সামসুল হুদা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৪ ০৬:৪৮
Share: Save:

গোসাবার বিভিন্ন দ্বীপে পাকা রাস্তা না থাকার সমস্যা দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে কয়েকটি দ্বীপে সেই কাজ শুরু হয়েছে। অন্যত্র কাজ নির্বিঘ্নে চললেও ছোট মোল্লাখালি বাজার থেকে সাতজেলিয়া খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার রাস্তাটি তৈরির জন্য স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার হুমকির মুখে পড়ে কিছু ব্যবসায়ী নিজেদের দোকানঘরের সামনের অংশ ভেঙে দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০ ফুটের রাস্তাটি তৈরির জন্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে কাজটি হওয়ার কথা। এ জন্য ঠিকাদার নিয়োগও হয়েছে। কাঁচা রাস্তাটি প্রায় ১৬ ফুটের। কিন্তু কাজ শুরু হওয়ার পরেই বাড়তি জায়গা ছাড়ার জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতা গণেশ বিশ্বাস এবং তাঁর অনুগামীরা হুমকি দেওয়া শুরু করেন বলে ওই এলাকার কয়েক জন ব্যবসায়ী ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, হুমকির মুখে পড়ে তাঁরা দোকানের সামনের দিকের নির্মাণ ভেঙে দিয়েছেন বা জমির অংশ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

ওই সাত কিলোমিটার রাস্তার একপাশে জঙ্গল ছিল। রাস্তা তৈরির জন্য তা সাফ করা হয়েছে। অন্য পাশে সব মিলিয়ে প্রায় ৩২টি দোকান রয়েছে। তার মধ্যে ইতিমধ্যে চার-পাঁচটি দোকানের সামনের অংশ ভাঙা দেখা যাচ্ছে।

অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা গণেশবাবু ওই এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তিনি মানেননি। তাঁর দাবি, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। এ রকম কোনও ঘটনার সঙ্গে আমরা যুক্ত নই। ২০ ফুট রাস্তা এবং সঙ্গে নিকাশি নালার জন্য জায়গা লাগবে। সেইমতো সব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক হয়েছে, রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়া হবে। সেইমতো ব্যবসায়ীরা দোকানের সামনে জমি ছাড়ছেনও। কয়েক জন চায় না রাস্তা হোক। তাই তাঁরা এ সব করছেন।”

যে সব ব্যবসায়ীর দোকানের সামনের অংশ ইতিমধ্যেই ভাঙা দেখা যাচ্ছে, তাঁদের দাবি, “রাস্তা তৈরি নিয়ে বৈঠকের সময়ে জায়গা ছাড়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তা ছাড়া, দোকানের সামনের দিক ভাঙতে হলে তো কোনও নোটিস দিতে হবে বা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। তা তো কিছুই হয়নি।” যে সব ব্যবসায়ী স্বেচ্ছায় জমি ছেড়েছেন, তাঁরা ওই বৈঠক নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আবু তাহের সর্দার জানিয়েছেন, ওখানে ঠিক কী হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি সমীক্ষায় রাস্তা তৈরির জন্য পর্যাপ্ত জমি না থাকে, তা হলে রাস্তা চওড়া করা যাবে না। কেউ যদি স্বেচ্ছায় জমি দেন, তা হলে রাস্তা চওড়া করা সম্ভব। এ ব্যাপারে ক্ষতিপূরণের কোনও ব্যবস্থা নেই। গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, “এলাকার উন্নয়নের জন্য রাস্তা খুব জরুরি। ওই রাস্তার জন্য একটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল ঠিকই। তবে, সকলকে বলেছি, কারও কোনও ক্ষতি না করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য।”

সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন...

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gosaba trinamul mollakhali bazar samsul huda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE