Advertisement
E-Paper

স্বরূপনগরে এগিয়ে বাম, অস্বস্তি তৃণমূলের অন্দরে

বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে এ বারও তৃণমূল ক্ষমতা ধরে রাখলেও তাদের কাছে কাঁটা হয়ে রইল স্বরূপনগর। কেননা, এই লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে একমাত্র স্বরূপনগরেই বামেদের চেয়ে তারা পিছিয়ে। লোকসভা ভোটের ফলাফলের কাটাছেঁড়ায় জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, ওই এলাকায় দক্ষ নেতৃত্বের অভাবেই তাঁদের ভরাডুবি হয়েছে। রাজনীতির কারবারিরাও মনে করছেন, জনসংযোগের অভাবেই স্বরূপনগরে পিছিয়ে রয়েছে রাজ্যের শাসক দল।

নির্মল বসু ও সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০১:৪২

বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে এ বারও তৃণমূল ক্ষমতা ধরে রাখলেও তাদের কাছে কাঁটা হয়ে রইল স্বরূপনগর। কেননা, এই লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে একমাত্র স্বরূপনগরেই বামেদের চেয়ে তারা পিছিয়ে। লোকসভা ভোটের ফলাফলের কাটাছেঁড়ায় জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, ওই এলাকায় দক্ষ নেতৃত্বের অভাবেই তাঁদের ভরাডুবি হয়েছে। রাজনীতির কারবারিরাও মনে করছেন, জনসংযোগের অভাবেই স্বরূপনগরে পিছিয়ে রয়েছে রাজ্যের শাসক দল।

স্বরূপনগর থেকে এ বার সিপিএম প্রার্থী দেবেশ দাস পেয়েছেন ৭০,১০২টি (৩৯%) ভোট। তৃণমূল প্রার্থী কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের প্রাপ্ত ভোট ৬৬,৪৫২টি (৩৭%)। অথচ, গত বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র তৃণমূল-কংগ্রেস জোটের দখলে আসে। তৃণমূল প্রার্থী বীণা মণ্ডল ৭৪১৪ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। তিনি পান ৮৩,৬৪১টি ভোট। বামেরা পেয়েছিল ৭৬,২২৭টি (৪৫%) ভোট।

কিন্তু তার পরে যে এখানে রাজ্যের শাসক দলের জমি কিছুটা আলগা হয়ে যায়, তা গত বছর পঞ্চায়েত ভোটেই বোঝা গিয়েছিল। পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বামেরা। ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে আটটি দখল করে তারা। দু’টি পায় তৃণমূল। ওই ফলাফল থেকেও তৃণমূল যে শিক্ষা নেয়নি এ বারের লোকসভা ভোটের ফলাফলে তা ফের প্রমাণিত। এ বার এখানে ২৬,১২০টি ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস চতুর্থ স্থানে এলেও সাতটি বিধানসভার মধ্যে এখানেই সবচেয়ে বেশি ভোট (১৩,৩৭১) পেয়েছে। ঠারেঠোরে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব স্বীকার করেছেন, তাঁদের কিছু ভোট বিরোধী দলগুলির মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছে।

এই কেন্দ্রে রাজ্যের শাসক দলের চেয়ে এগিয়ে থাকা নিয়ে সিপিএমের স্বরূপনগর লোকাল কমিটির সম্পাদক হামালউদ্দিন আহমেদের দাবি, ‘‘এখানে উন্নয়নের প্রশ্নে তৃণমূলের প্রতি মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তাই তাঁরা আমাদের ভোট দিয়েছেন।” এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “স্বরূপনগরে দলের কেন খারাপ ফল হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, “এক বছরের মধ্যে আমরা ফের নিজেদের জায়গায় ফিরতে পারব। তার জন্য সকলকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে।” স্বরূপনগর ব্লক তৃণমূল সভাপতি রমেন সর্দার বলেন, “পঞ্চায়েতে আমরা ১২ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলাম। সেটা কমে সাড়ে তিন হাজার হয়েছে। পাশাপাশি বিজেপিও একটা বড় অংশের ভোট কেটেছে। গত বিধানসভায় এখানে জোট ছিল। লোকসভায় আমরা একা লড়েছি, আশা করছি বিধানসভা ভোটের আগে ফাঁক পূরণ হবে।”

শাসক দলের পক্ষে ক্ষত মেরামত যে সহজসাধ্য হবে না বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারি এবং জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের মতে, স্বরূপনগরে তৃণমূলকে এখন যাঁরা নেতৃত্ব দেন, তাঁদের অনেকেরই স্বচ্ছ ভাবমূর্তির অভাব রয়েছে। বিধায়ককে প্রয়োজনে সব সময় পাওয়া যায় না, এমন অভিযোগও রয়েছে। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী এলাকার বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও হাসনাবাদ থেকে নির্বাচিত হওয়ায় সেখানেই তাঁকে বেশি সময় দিতে হচ্ছে। তৃণমূলের হাতে যখন পঞ্চায়েত সমিতি ছিল, তখন পরিষেবা নিয়েও অভিযোগ উঠত। স্বরূপনগরে গরু পাচার রোধে তৃণমূল নেতৃত্ব সে ভাবে উদ্যোগী হননি এবং তাঁদের কেউ কেউ পাচারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে মানুষের। যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিধায়ক।

nirmal basu simanta mitra swarupnagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy