ফের স্কুল-শিক্ষিকার পোশাক নিয়ে বিক্ষোভ।
সোমবার সালোয়ার-কামিজ পরে যাওয়ায় অভিভাবকদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন হরিপালের মহেশটিকরির একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষিকা। মিনিট পনেরো তাঁকে স্কুলের সামনে ঘেরাও করে রাখা হয়। কিন্তু তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষের সমর্থনও পাননি। স্কুল কর্তৃপক্ষও তাঁর সালোয়ার-কামিজে আপত্তি জানিয়েছেন।
গত কয়েক বছরে কখনও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কখনও হাওড়া, কখনও বা হুগলির সিঙ্গুরে স্কুল-শিক্ষিকাদের শাড়ির বদলে পোশাক হিসেবে সালোয়ার-কামিজ নিয়ে নানা বিতর্ক হয়েছে। ক্ষোভ-বিক্ষোভও কম হয়নি। সিঙ্গুরের স্কুলটির পাঁচ শিক্ষিকা এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। হাইকোর্ট তাঁদের পক্ষেই রায় দেয়। কিন্তু তার পরেও এ দিনের হরিপালের ঘটনা বুঝিয়ে দিল, শিক্ষিকাদের পোশাক-বিতর্ক এখনও পুরোপুরি মেটেনি।
অভিভাবকদের আচরণে মুষড়ে পড়া হরিপালের স্কুলটির ওই শিক্ষিকা এ দিন বলেন, “বিষয়টি আপাতত মিটে গিয়েছে। কিন্তু পরে কী হবে জানি না।” প্রধান শিক্ষক স্বপন ভৌমিককে এই পরিস্থিতিতে তিনি পাশে পাননি। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, শাড়ি না পরে এসে ওই শিক্ষিকা অনুচিত কাজ করেছেন। স্বপনবাবু বলেন, “পরিচালন সমিতির তরফেও ওই শিক্ষিকাকে সালোয়ার-কামিজ পরে স্কুলে আসতে বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি শোনেননি। তাতেই অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখান। পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে ওই শিক্ষিকার মানিয়ে চলা উচিত।”
মাস সাতেক আগে ওই শিক্ষিকা হরিপালের স্কুলটিতে যোগ দেন। প্রথমে ট্রেনে, তার পরে অটোয় চড়ে স্কুলে আসেন। প্রথম দিকে স্কুলের অন্য শিক্ষিকাদের মতো তিনিও শাড়ি পরে আসতেন। মাস খানেক ধরে সালোয়ার-কামিজ পরে আসছেন। তাঁর কথায়, “এটা আদৌ অশালীন পোশাক নয়। চলাফেরায় সুবিধার জন্যই পরি। কিন্তু এমন অবস্থা হবে ভাবিনি।”
ওই শিক্ষিকাকে সালোয়ার-কামিজে দেখে কিছু দিন ধরেই অভিভাবকদের একাংশ আপত্তি জানাচ্ছিলেন। এ দিন সাড়ে ১০টা নাগাদ স্কুলে ঢোকার সময়ে তাঁদের একাংশ ঘেরাও করেন ওই শিক্ষিকাকে। কেন তিনি শাড়ি ছেড়ে ওই পোশাক পরে আসেন, তা নিয়ে জবাবদিহি চাওয়া হয়। কিছু ক্ষণ পরেই অবশ্য বিক্ষোভকারীরা সরে যান। স্কুলে ঢুকে পড়েন শিক্ষিকা।