Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলছাত্রীরা কি টাকা পেয়েছে, হিসেব নেই

আট বছর ধরে দারিদ্রসীমার নীচের অর্থাৎ বিপিএল তালিকাভুক্ত ছাত্রীদের সাহায্যের জন্য বরাদ্দ টাকার হিসেব পায়নি রাজ্য সরকার। টাকার পরিমাণ প্রায় ৯০ কোটি। সেই টাকা ছাত্রীরা কতটা পেয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খাস সরকারি মহলেই।

সুপ্রিয় তরফদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ০৩:০০
Share: Save:

আট বছর ধরে দারিদ্রসীমার নীচের অর্থাৎ বিপিএল তালিকাভুক্ত ছাত্রীদের সাহায্যের জন্য বরাদ্দ টাকার হিসেব পায়নি রাজ্য সরকার। টাকার পরিমাণ প্রায় ৯০ কোটি। সেই টাকা ছাত্রীরা কতটা পেয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খাস সরকারি মহলেই।

প্রতি বছর স্কুলগুলিকে কয়েক কোটি টাকা দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই টাকা কোথায় কী ভাবে খরচ হচ্ছে, স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারা সেই বিষয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে। গত আট বছর ধরে প্রায় ৯০ কোটি টাকার ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ বা সদ্ব্যবহার শংসাপত্র পাননি তাঁরা। সেই জন্য সম্প্রতি রাজ্যের সব জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক)-এর কাছে কড়া চিঠি পাঠিয়েছে বিকাশ ভবন। এক সপ্তাহের মধ্যে স্কুলশিক্ষা দফতরের কমিশনারের কাছে খরচের সবিস্তার তথ্য ও হিসেব দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সরকারি সূত্রের খবর, এখন বছরে ছাত্রীদের মাথাপিছু ১২০০ টাকা দেওয়ার কথা। ২০০৮ সালে নবম-দশম শ্রেণিতে বিপিএল তালিকাভুক্ত ছাত্রীদের জন্য চালু হয় ‘ইনসেন্টিভ স্কিম ফর গার্ল স্টুডেন্টস’। এই খাতে শেষ কিস্তি দেওয়া হয়েছিল গত বছর। এ বছর এই প্রকল্পকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। প্রতি বছর জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)-দের মাধ্যমে এই টাকা স্কুলে পাঠায় দফতর। ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষ পর্যন্ত এই টাকা পাঠানো হয়েছে।

কিন্তু গত আট বছরে এই খাতে বরাদ্দের টাকার হিসেব দিয়ে একটিও রিপোর্ট জমা পড়েনি। এ বার টনক নড়েছে স্কুলশিক্ষা দফতরের। স্কুল পরিদর্শকদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ওই টাকার হিসেব চেয়েছে তারা। হিসেব না-দেওয়ার বিষয়টি ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে সেই চিঠিতে মন্তব্য করেছেন স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারা। প্রাপ্য টাকা ছাত্রীদের কাছে পৌঁছয়নি বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে চিঠিতে।

প্রশ্ন উঠেছে, আট বছর পরে হঠাৎ টাকার হিসেব চাওয়া হল কেন?

স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তার দাবি, গত নভেম্বরেও একই ভাবে হিসেব চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার কোনও উত্তর আসেনি। এ বার সেই চিঠিরই প্রতিলিপি পাঠিয়ে ফের হিসেব তলব করায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিকাশ ভবনে।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘স্বচ্ছতা বজায় রাখতে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের উচিত দ্রুত সেই হিসেব পেশ করা।’’ এক জেলা স্কুল পরিদর্শক জানান, স্কুলের হিসেব এলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা দফতরে পাঠানো হবে। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘নির্ধারিত সময়সীমা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। তার পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE