মহিলাদের উপরে নির্যাতন-নিগ্রহের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে দেরির অভিযোগ ওঠে মূলত পুলিশের বিরুদ্ধে। এ বার এক ম্যাজিস্ট্রেটের দিকেই আঙুল উঠল। এবং সেই আঙুল তুলল কলকাতা হাইকোর্টের এক ডিভিশন বেঞ্চ।
শারীরিক ভাবে নির্যাতিত এক মহিলার গোপন জবানবন্দি সাত দিন পরে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম)-এর আদালত। হাইকোর্টের প্রশ্ন, সঙ্গে সঙ্গেই তো জবানবন্দি নেওয়ার কথা। তা হলে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে সাত দিন পরে তাঁর জবানবন্দি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল কেন?
নিম্ন আদালতের ওই নির্দেশ নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম রায় ও বিচারপতি মলয়মরুত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে। বিচারপতি রায় হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সুগত মজুমদারকে আদালতে ডেকে পাঠিয়ে নির্দেশ দেন, ওই নির্যাতিতার জবানবন্দি ৩০ জুলাইয়ের বদলে আজ, মঙ্গলবারেই গ্রহণ করতে হবে।
এ দিন এক অভিযুক্তের আগাম জামিন সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমার অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের (এসিজেএম) আদালতে গত ২৩ জুলাই ওই নির্যাতিতার মামলাটি ওঠে। এসিজেএম ওই আদালতেরই এক বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন, ৩০ জুলাই ওই মহিলার গোপন জবানবন্দি গ্রহণ করতে হবে। বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটরাই গোপন জবানবন্দি গ্রহণ করে থাকেন।
সরকারি কৌঁসুলির বক্তব্য শুনে বিচারপতি রায় ক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ডেকে পাঠান। রেজিস্ট্রার জেনারেল আদালতে হাজির হলে বিচারপতি রায় তাঁকে জানান, এই সব ক্ষেত্রে মামলার দিন অথবা তার পরের দিনই নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি গ্রহণ করাটাই নিয়ম। তা না-হলে নির্যাতিতাকে কেউ শিখিয়ে-পড়িয়ে নিয়ে ফায়দা তুলতে পারে। কী ভাবে এক জন এসিজেএম বিচার ব্যবস্থার প্রাথমিক ধাপে গোপন জবানবন্দি সাত দিন পিছিয়ে দিলেন, তা জানতে বিচারপতি নির্দেশ দেন রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। ভর্ৎসনা করা হয় বনগাঁর এসিজেএমকে। বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে মঙ্গলবার ওই মহিলার জবানবন্দি নেওয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy