Advertisement
E-Paper

অঙ্গের প্রতিস্থাপন ত্বরান্বিত করতে নতুন পদ

ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে থাকা রোগীর অবস্থা বুঝে তাঁর পরিবারকে অঙ্গদানের বিষয়টি বোঝাতে প্রতিটি হাসপাতালে এক জন কো-অর্ডিনেটর থাকবেন

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

এক দাওয়াইয়ে দুই রোগ সারাতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর!

রাজ্যে অঙ্গগ্রহণের আবেদনের তুলনায় দাতা খুব কম। তাই বেআইনি ভাবে অঙ্গ কেনাবেচার প্রবণতা রয়েছে। এই রোগ সারাতে তৈরি হচ্ছে নতুন পদ, যার পোশাকি নাম ‘কো-অর্ডিনেটর’। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আইসিইউ বা ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে থাকা রোগীর অবস্থা বুঝে তাঁর পরিবারকে অঙ্গদানের বিষয়টি বোঝাতে প্রতিটি হাসপাতালে এক জন কো-অর্ডিনেটর থাকবেন।

সম্প্রতি এসএসকেএমে এক জন কো-অর্ডিনেটর কাজ শুরু করেছেন। তিনি বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি রোগীর সম্পর্কে চিকিৎসকদের থেকে খোঁজ রাখবেন। ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণার মতো পরিস্থিতি হলে রোগীর পরিবারকে অঙ্গদানে উৎসাহ দেবেন তিনি। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তিনি দ্রুত অঙ্গদানের সরকারি কাজের দিকটি তদারকি করবেন। এর আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চক্ষুদান করানোর জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে এমন পদক্ষেপ করা হয়েছিল। যার জেরে চোখ প্রতিস্থাপনের কাজ অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।

‘রিজিওনাল অরগ্যান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন’-এর (রোটো) যুগ্ম অধিকর্তা অর্পিতা রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ভিন্‌ রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্য মৃতদেহ থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কাজে পিছিয়ে রয়েছে। কী ভাবে তা আরও দক্ষতার সঙ্গে করা যায়, সে নিয়েই পরিকল্পনা হচ্ছে।’’

স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল চক্ষু ব্যাঙ্ক করতে উদ্যোগী হয়েছে। তাই চোখ প্রতিস্থাপনে এখন সমস্যা কমেছে। কিন্তু লিভার, কিডনি, হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন এখন রাজ্যের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। পর্যাপ্ত পরিকাঠামো থাকলেও অঙ্গ না মেলায় অনেক ক্ষেত্রে পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। রোগীদের দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অঙ্গদান বাড়লে ঘুরপথে অঙ্গ কেনাবেচার প্রবণতাও কমবে বলে আশা স্বাস্থ্য দফতরের।

স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা জানান, এ রাজ্যে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা অনেক। কিন্তু ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করে দিলেও প্রতিস্থাপনের কাজ সে ভাবে হয় না। হাসপাতালের সুপার কিংবা অধ্যক্ষের পক্ষেও এ ধরনের সব রোগীর পরিজনেদের অঙ্গদান নিয়ে বোঝানো সম্ভব হয় না। এই কাজের জন্য এক জন নির্দিষ্ট ব্যক্তি নিযুক্ত থাকলে অনেক সহজে কাজ হবে।

অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা অদিতিকিশোর সরকার জানান, রোগী পরিষেবার কথা ভেবেই কো-অর্ডিনেটর নিয়োগের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দিল্লি, মহারাষ্ট্র এবং তামিলনাড়ুর বিভিন্ন হাসপাতালের কর্তা এবং চিকিৎসকদের নিয়ে সম্প্রতি একটি কর্মশালারও আয়োজন করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘শোকের সময়েও যাতে দক্ষতার সঙ্গে পরিবারকে অঙ্গদানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বোঝাতে কো-অর্ডিনেটরেরা সক্ষম হন, সে দিকে নজর রেখেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’

সম্প্রতি শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গেও এ বিষয়ে বৈঠক করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সরকারির পাশাপাশি অন্য রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতাল কী ভাবে অঙ্গ প্রতিস্থাপনে এগিয়ে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে বুঝতে বেসরকারি হাসপাতালের কর্তা এবং চিকিৎসকদের একটি কর্মশালায় যোগদানের জন্যও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সংগঠন, ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটালস অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’-র সহ-সভাপতি রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘অঙ্গ প্রতিস্থাপন সম্পর্কে অনেক সময় নানা ধোঁয়াশা তৈরি হয়। সরকারের এই উদ্যোগ খুব ভাল। এর ফলে অঙ্গ প্রতিস্থাপন সহজ হবে।’’

organ transplantation Doctor kolkata কলকাতা অঙ্গ প্রতিস্থাপন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy