জমে গিয়েছে পাহাড়-প্রমাণ মামলা। তাই সারদা মামলায় মদন মিত্রের জামিন খারিজের ব্যাপারে সিবিআইয়ের আবেদন এখনই তাদের পক্ষে শোনা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
উচ্চ আদালত এক বার যাঁর জামিন বাতিল করে দেয়, নিম্ন আদালত কী ভাবে সেই ব্যক্তিকে জামিন দিতে পারে, সেটা তাদের বোধগম্য হচ্ছে না বলে জানিয়েছিল সিবিআই। শুক্রবার, নিম্ন আদালতে মদনবাবুর জামিনের দিনেই ওই তদন্তকারী সংস্থা জানিয়ে দেয়, প্রাক্তন মন্ত্রীর জামিন বাতিলের আবেদন নিয়ে তারা অবিলম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবে। এবং যত দ্রুত সম্ভব সেই মামলার শুনানির আর্জিও জানাবে। শনি-রবি-সোমবারের ছুটির পরে কালবিলম্ব না-করে সিবিআই মঙ্গলবারেই মদনবাবুর জামিন বাতিলের আর্জি জানায় হাইকোর্টে। বিচারপতি অসীম রায় ও বিচারপতি মলয়মরুত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন স্তূপীকৃত মামলার কথা তুলে জানিয়ে দেয়, আপাতত ওই আর্জি শোনার সুযোগ নেই।
সারদা কেলেঙ্কারির মামলায় অভিযুক্ত মদনবাবুকে ২০১৫ সালের অক্টোবরে নিম্ন আদালত তাঁকে প্রথম বার জামিন দেয়। কিন্তু তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ দিনের মাথায় সেই জামিন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। তারও ন’মাস তিন সপ্তাহ পরে, গত ৯ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালত দ্বিতীয় বার জামিন মঞ্জুর করে মদনবাবুর। সেই জামিন বাতিলের জন্যই হাইকোর্টে গিয়েছে সিবিআই। তাদের আশা ছিল, মূল মামলাটি সারদা গোষ্ঠীর তছরুপ নিয়ে এবং তাতে এক সময়ের পরাক্রান্ত মন্ত্রী মদন মিত্র অভিযুক্ত বলেই দ্রুত শুনানির আবেদন মঞ্জুর হবে।
এ দিন সকালে ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি এজলাসে বসতেই সিবিআইয়ের আইনজীবী মহম্মদ আসরাফ আলি তাঁদের উদ্দেশে জানান, জরুরি ভিত্তিতে একটি মামলা শুনানির জন্য আদালত গ্রহণ করুক। সেটি মদন মিত্রের জামিন খারিজের মামলা। বিচারপতি অসীম রায় জানিয়ে দেন, তাঁর ডিভিশন বেঞ্চের তালিকায় থাকা মামলাগুলির নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে অন্য কোনও মামলা শোনা যাচ্ছে না।
স্তূপাকার মামলা শেষ করার জন্য অসুস্থতা সত্ত্বেও তাঁকে আদালতে আসতে হচ্ছে বলে জানান বিচারপতি রায়। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম এক সপ্তাহ। চিকিৎসকের নিষেধ সত্ত্বেও জমে থাকা মামলার ফয়সালা করার জন্য আদালতে আসছি। ইতিমধ্যে অন্য আদালত থেকেও বেশ কিছু মামলা এই বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। আগে তালিকাভুক্ত সেই সব মামলার নিষ্পত্তি হোক। তার পরে আপনাদের (সিবিআইয়ের) মামলা শুনব।’’
তদন্তকারী অফিসার ফণিভূষণ করণও আদালতে ছিলেন। তাঁর উদ্দেশে বিচারপতি রায় বলেন, ‘‘কিছু দিন অপেক্ষা করুন।’’ হাইকোর্ট সূত্রের খবর, ওই ডিভিশন বেঞ্চের বিচার্য হিসেবে এ দিনের মামলার যে-তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বলা আছে, যতই জরুরি হোক, আগামী দু’সপ্তাহ আর কোনও মামলা ওই তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।
পরে সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়, ‘মামুলি মামলা তো নয়। মদন মিত্রের জামিন খারিজের আবেদন জানিয়ে দায়ের করা মামলা। আমরা চেয়েছিলাম, দ্রুত শুনানি হোক। যা-ই হোক, আমরা অপেক্ষা করছি।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy