এই দরজা ভেঙেই ঢোকে দুষ্কৃতীরা। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ষবরণের রাতে বছর তিরিশের স্ত্রীকে ঘরে রেখে কর্মসূত্রে বাইরে গিয়েছিলেন স্বামী। চার মত্ত যুবক দরজা ভেঙে সেই ঘরে ঢুকে মহিলাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে গিয়ে প্রহৃত হন বাড়ির প্রৌঢ় মালিক।
মঙ্গলবার রাত ২টো নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানা এলাকায়। পুলিশ তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম রতন দাস, সৌগত সরকার ও মৃণাল বিশ্বাস। তাদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। এক অভিযুক্ত পলাতক। বারাসত পুলিশ-জেলার এএসপি বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, ‘‘আরও কেউ যুক্ত ছিল কি না, পুলিশ খতিয়ে দেখছে।’’ বুধবার বারাসত জেলা হাসপাতালে মহিলার মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে। রতন ২০১১ সালে দত্তপুকুরে কলেজ ছাত্র সৌরভ চৌধুরী খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিল। পরে প্রমাণাভাবে ছাড়া পায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বর্ষবরণের রাতে এলাকায় একটি পিকনিক চলছিল। সাউন্ডবক্সে গান বাজিয়ে মত্ত অবস্থায় নাচানাচি করছিল কয়েক জন যুবক। রাত ২টো নাগাদ চার যুবক ওই মহিলার ঘরে চড়াও হয়ে দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। শব্দ শুনে বেরিয়ে আসেন বাড়ির মালিক। তিনিও বাড়িতে একাই থাকেন। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘তারস্বরে মাইক বাজছিল। তার মধ্যেই দরজা ভাঙার শব্দ শুনে বাইরে আসি। সৌগত বলে এক যুবককে দেখেছিলাম। ওরা আমাকে গালিগালাজ, ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। এক জন ঘুষি মেরে আমাকে নালায় ফেলে দেয়। এর মধ্যেই ওরা মহিলার ঘরে ঢুকে পড়ে।’’ এর কিছুক্ষণ পরে ওই প্রৌঢ়ই পাড়া-পড়শিদের ঘুম থেকে তুলে ঘটনার কথা বলেন। তাঁরা এসে দেখেন, মহিলা অচৈতন্য অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। দিন দশেক আগে ওই দম্পতি এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে নাগরিক-বার্তা মমতার
পরে মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই যুবকেরা প্রথমে জানলায় ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলতে বলে। ভয়ে তিনি চিৎকার করতে থাকেন। তখন দরজা ভেঙে চার যুবক ঘরে ঢুকে তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করে। পরে যুবকেরা পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০১১ সালে এলাকার অসামাজিক কাজকর্মের প্রতিবাদ করে খুন হয়েছিলেন কলেজ ছাত্র সৌরভ চৌধুরী। এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত শ্যামল কর্মকার ও তার দলবলকে এলাকা থেকে পালাতে সাহায্য করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল রতন ওরফে তোতা। সৌরভ হত্যাকাণ্ডে শ্যামল-সহ অন্যেরা সাজা পেলেও প্রমাণাভাবে ছাড়া পেয়ে যায় তোতা। এ দিন সৌরভের দাদা সন্দীপ বলেন ‘‘আমার ভাইয়ের মৃত্যুর পরে বেশ কিছু দিন এলাকায় অসামাজিক কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু ফের এরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy