সিপিএমের যুবনেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
একক ভাবে ব্রিগেডে সমাবেশ ডাকল সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। সোমবার বাম যুব সংগঠনের রাজ্য দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করলেন রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ওই সমাবেশ ডাকা হয়েছে। তার আগে, সংগঠনের সর্বভারতীয় প্রতিষ্ঠা দিবস ৩ নভেম্বর থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করবে তারা। কোচবিহার থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রা সব জেলা ছুঁয়ে যাবে বলে পরিকল্পনা নিয়েছেন মিনাক্ষীরা। ব্রিগেডে হবে তারই সমাপ্তি সমাবেশ।
কৌতূহল হল, লোকসভা ভোটের আগে, লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে বামফ্রন্টকে এড়িয়ে কেন একক ভাবে যুব সংগঠনকে দিয়ে ব্রিগেড সমাবেশ ডাকাল সিপিএম? এ নিয়ে ফ্রন্ট শরিকদের মধ্যে জল্পনা তৈরি হয়েছে। কোনও কোনও শরিক নেতা এ-ও বলছেন, ভোটের ঠিক মুখে এই ধরনের ‘একলা চলো’ ফ্রন্টের ঐক্যের জন্য ইতিবাচক নয়। আবার সিপিএমের যুক্তি, এটা দলের সমাবেশ নয়। গণসংগঠনের সমাবেশ। তাদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব রয়েছে, স্বতন্ত্র কর্মসূচি করারও অধিকার রয়েছে। তবে অনেকেরই মতে, আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের পরিকল্পনা এবং অনুমোদন ছাড়া এই কর্মসূচি ঘোষণা করেনি দীনেশ মজুমদার ভবন। এতে মহম্মদ সেলিম, বিমান বসুদের সিলমোহর রয়েছে এটা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রে খবর, রাজ্য নেতারা অনেকেই শরিক দলগুলির ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে সন্দিহান। বামফ্রন্টের ভিতরে নির্বাচনী ঐক্য আগের মতো ধরে রাখা যাবেই, এ নিয়েও নিশ্চিত নন অনেক নেতা। ফ্রন্টের ভাঙন ঠেকাতে এখনও অবশ্য অশীতিপর বিমানের উপরেই আস্থা রাখছে দল।
আগামী মঙ্গল ও বুধবার দু’দিন ধরে চলবে সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠক। দলীয় সূত্রে খবর, সব জেলার নেতৃত্বকে বার্তা দিয়ে দেওয়া হবে, ব্রিগেড ভরাতে প্রস্তুতি নিতে। নামে যুব সংগঠনের ব্রিগেড হলেও, তা আসলে দলেরই গণজমায়েত হবে, এমনটাই পরিকল্পনা সিপিএমের। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ব্রিগেডের সমাবেশে এক দিকে যেমন মিনাক্ষী, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্যদের মতো তরুণ নেতানেত্রীরা বক্তাদের তালিকায় থাকবেন, তেমনই আমন্ত্রিত বক্তা করে আনা যাবে বিমান, সেলিমদেরও। এতে শরিকদেরও ছোঁয়া বাঁচানো গেল, আবার পার্টির নেতাদের বলার মঞ্চও প্রস্তুত করে দেওয়া গেল। সিপিএম পুরোদস্তুর নামলে, এখনও ব্রিগেড ভরানোর ব্যাপারে সংশয় নেই নেতাদের। তবে সংশয় রয়েছে অন্যত্র। সিপিএমের এক নেতা বলেই ফেললেন, ‘‘ব্রিগেড ডাকলে এখনও যে মাঠ ভরবে তা নিশ্চিত। কিন্তু বুথে লোক চাই! বাক্সে ভোট চাই। সেটা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে। তবে আমরা আশাবাদী, মানুষ আমাদের প্রয়োজন বুঝতে বেশি দেরি করবে না।’’
তাৎপূর্যপূর্ণ বিষয় হল, দু’মাস ব্যাপী যে পদযাত্রার ডাক দিয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন, তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইনসাফ যাত্রা’। যে শব্দবন্ধের মধ্যে সংখ্যালঘু মন পাওয়ার চেষ্টা দেখছেন অনেকে। সোমবার কর্মসূচি ঘোষণা করে মিনাক্ষী স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছেন, তাঁদের এই কর্মসূচি তৃণমূল, বিজেপি উভয়ের বিরুদ্ধে। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রের সরকার যা বলেছিল তা পূরণ করেনি। রাজ্যেও কর্মসংসথানের একই দশা। সেই সঙ্গে চলছে দেদার দুর্নীতি। তার বিরুদ্ধেই এই কর্মসূচি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy