সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজগুলি টিউশন ফি বাবদ যে-টাকা নেয়, রাজ্য সরকার তার ৫০ শতাংশ নিয়ে নেবে। আর ওই সব কলেজ উন্নয়নের নামে বছরের বিভিন্ন সময়ে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে যে-টাকা আদায় করে, তা নেওয়া বন্ধ করতে উদ্যোগী হচ্ছে সরকার। বুধবার বিধানসভায় এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্যে শিক্ষা শিবিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। যোগমায়া কলেজের অধ্যক্ষা গার্গী নাথ জানান, ৫০ শতাংশ টিউশন ফি সরকার তো নিয়েই নেয়। তাঁর প্রশ্ন, শিক্ষামন্ত্রী উন্নয়নের নামে যে-টাকার কথা বলছেন, তার মধ্যে বিদ্যুতের বিল থেকে শুরু করে শিক্ষামূলক ভ্রমণে পড়ুয়াদের নিয়ে যাওয়ার টাকাটাও পড়ে। এর সংস্থান কোথা থেকে হবে? সরকার কি পুরো টাকাটাই দেবে? ‘‘এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কলেজের সঙ্গে আলোচনায় বসা দরকার,’’ বলেছেন গার্গীদেবী।
লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার অবশ্য সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ সমর্থনই করছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, শিক্ষামন্ত্রী যথেষ্ট ভেবেচিন্তেই এ কথা বলছেন। গত ৩৪ বছর ধরে অনেক কলেজেই উন্নয়নের নামে নেওয়া টাকার একটা বড় অংশ ইউনিয়নের পকেটে চলে যেত। পার্থবাবুর এই বলিষ্ঠ পদক্ষেপে কোনও টাকাই আর ইউনিয়নের পকেটে যাবে না।’’
এ দিন মালদহে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তজমুল হোসেনের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পার্থবাবু জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে ২২টি সাধারণ, ২৫টি বিএড এবং একটি আইন কলেজ। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি ও কুশমণ্ডিতে দু’টি কলেজ তৈরি হবে বলে জানান মন্ত্রী।
প্রশ্ন ওঠে, নতুন নতুন কলেজ তো হচ্ছে। কিন্তু যাঁরা কলেজের কাজকর্ম চালান, সেই কর্মীদের অজস্র পদ শূন্য পড়ে আছে। কর্মী নিয়োগের বিষয়টি কি কলেজ সার্ভিস কমিশন (সিএসসি)-এর আওতায় আনা হবে?
শিক্ষামন্ত্রী জানান, তাঁদের আমলে এ-পর্যন্ত তাঁরা ১৪৩৬টি নতুন পদ সৃষ্টি করেছেন। অনেক কলেজ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে অনুমোদন চায় বটে। কিন্তু সরকারের তরফে কিছু করার আগেই তারা কর্মী নিয়োগ করে। সরকার অনুমোদন পাঠালে ওই সব কলেজ সেই কর্মীদেরই আনুষ্ঠানিক ভাবে দেখিয়ে দেয়। পরে, সভার বাইরে শিক্ষামন্ত্রী জানান, এই ভাবে অনেক কলেজে স্বজনপোষণ চলছে। এই ধরনের ‘অনাচার’ বন্ধ করার জন্য তাঁর দফতর একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy