বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে নাক গলানোর অভিযোগ উঠছিল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। এ বার অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তে জোর খাটানোর ব্যাপারে কম যাচ্ছে না শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-ও।
এই অভিযোগের মূলে আছে শেষ মুহূর্তে স্নাতকোত্তরের বিজ্ঞান শাখার প্রবেশিকা পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত। আজ, সোমবার ওই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রবিবার জানানো হয়, ওই প্রবেশিকা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দাবি মেনেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, স্নাতকোত্তরে ভর্তির জন্য এ বার তিন জায়গায় (বালিগঞ্জ বিজ্ঞান কলেজ, রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজ এবং বিহারীলাল কলেজ) পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সোম থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বিভিন্ন শাখার জন্য ওই পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৫০০।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরেই ছাত্র সংসদ দাবি করে, বালিগঞ্জ বিজ্ঞান কলেজে ওই পরীক্ষা নেওয়া চলবে না। ওখানে যাঁদের আসন পড়েছিল, তাঁদের একটা বড় অংশের পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজে। এই দাবি কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, বালিগঞ্জে ওই পরীক্ষা নেওয়ার পরিকাঠামো নেই বলে এমন দাবি তুলেছিল ছাত্র সংসদ। এই মর্মে তারা শুক্রবার উপাচার্য সুগত মারজিতের কাছে স্মারকলিপিও পেশ করে। তার পরেই তড়িঘড়ি নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, ওই প্রবেশিকা আপাতত হচ্ছে না। নতুন নির্ঘণ্ট পরে জানানো হবে।
টিএমসিপির চাপে সিদ্ধান্ত বদল কেন, প্রশ্ন তুলেছেন বহু শিক্ষক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন কুটা-র প্রতিনিধি দিব্যেন্দু পাল বলেন, ‘‘পরীক্ষা কবে কোন কেন্দ্রে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষই তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার একমাত্র অধিকারী। এতে কোনও হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। পরীক্ষা কেন স্থগিত হল, তা নিয়ে আমরা অন্ধকারে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, স্নাতকোত্তরে ৬০% আসনে ভর্তি হয় সরাসরি। স্নাতক স্তরের ফলাফলের ভিত্তিতে। ভর্তি-পরীক্ষা বাকি ৪০ শতাংশের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, যে-হেতু রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ টিএমসিপির শক্ত ঘাঁটি, তাই সেখানে পরীক্ষা সরিয়ে নিয়ে যেতে চাপ দিচ্ছে ছাত্র সংসদ। বালিগঞ্জ বিজ্ঞান কলেজে টিএমসিপির সংগঠন তুলনায় দুর্বল।
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ অধিকারী বলেন, ‘‘পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। যা বলার তাঁরাই বলবেন।’’ উপাচার্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy