Advertisement
৩১ মার্চ ২০২৩
Aman Rice

ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসে ফের চিন্তা আমনে

অন্য বছর সাধারণত ১৫ অগস্টের মধ্যে আমন বোনার কাজ শেষ হয়ে গেলেও, এ বার বৃষ্টির অভাব থাকায় অগস্টের শেষ পর্যন্ত সে কাজ চলে। তাই নবান্নের আগে গোলায় ধান উঠবে কি না, সংশয় রয়েছে।

মাঠ থেকে ধান তুলে ঝাড়ার কাজ শুরু করেছেন চাষিরা। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের ভাটারা গ্রামে।

মাঠ থেকে ধান তুলে ঝাড়ার কাজ শুরু করেছেন চাষিরা। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের ভাটারা গ্রামে। ছবি: শুভ্র মিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২২ ০৭:০৩
Share: Save:

প্রয়োজনের সময়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টি মেলেনি। ফলে, চাষ শুরু করতে দেরি হয়েছে। এখন বেশির ভাগ জমিতেই ধানের শিষ পুষ্ট হতে শুরু করেছে। কিন্তু তা কতটা ঘরে তোলা যাবে, চাষির কপালে সে নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায়। সম্প্রতি যে দুর্যোগের পূর্বাভাস মিলেছে বঙ্গোপসাগরে, তা আছড়ে পড়তে পারে কালীপুজোর পর দিনই। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কতটা অংশে এর ধাক্কা লাগবে, তা এখনও স্পষ্ট না হলেও এর ফলে ফলন আরও কমতে পারে, এমন আশঙ্কা এখন থেকেই করতে শুরু করেছেন রাজ্যের কৃষি-কর্তারা। ঝড়-বৃষ্টি হলে চাষিদের কী করণীয়, সে নিয়ে ইতিমধ্যে প্রচারও শুরু করেছে কৃষি দফতর।

Advertisement

অন্য বছর সাধারণত ১৫ অগস্টের মধ্যে আমন বোনার কাজ শেষ হয়ে গেলেও, এ বার বৃষ্টির অভাব থাকায় অগস্টের শেষ পর্যন্ত সে কাজ চলে। তাই নবান্নের আগে গোলায় ধান উঠবে কি না, সংশয় রয়েছে। কিছু এলাকায় মাঠ থেকে ধান তোলা শুরু হলেও, বহু জমিতে এখন ধানের ফুল ধরেছে, কোথাও দানা পুষ্ট হচ্ছে। দিন কুড়ির মধ্যে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হওয়ার কথা।

পূর্ব বর্ধমানের নান্দাইয়ের চাষি বাপি শেখ বলেন, ‘‘দেরিতে চাষ শুরু হলেও ভাল আবহাওয়ায় গাছের বৃদ্ধি ভাল হয়েছে। রোগ-পোকারও তেমন সমস্যা নেই। তবে ঝড় এলে ধানের শিষ ঝরে যাবে। বড় ক্ষতি হতে পারে।’’ হুগলির আরামবাগের বিদ্যাপতি বাড়ুই, পুরশুড়ার বাপ্পাদিত্য ধোলেরা জানান, শুধু বৃষ্টি হলে কিছুটা সামলানো যাবে। কিন্তু ঝড় হলে বিপদ। সে ক্ষেত্রে পানের বরজ, মাচার আনাজের ক্ষতির সম্ভাবনাও আছে।

বেশি চিন্তায় উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাষিরা। সাগরের গুণধর জানা, সন্দেশখালির ধুচনিখালি গ্রামের বিষ্ণুপদ মণ্ডলদের কথায়, ‘‘দেরিতে চাষ হওয়ায় ফলন অনেকটা কম হয়েছে। তার উপরে যদি ঝড় হয়, সব শেষ হয়ে যাবে! বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকলে চাষের আর কিছুই থাকবে না।” বীরভূমের সিউড়ির তুষার মণ্ডল, দুলাল দাসেরা জানান, শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধান মাঠেই নষ্ট হয়েছিল। এখন ঝড়-বৃষ্টিতে আমনও নষ্ট হলে সঙ্কটে পড়তে হবে। ময়ূরেশ্বরের সতীনাথ পালের দাবি, ‘‘এলাকার প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে চাষ করা যায়নি। যেটুকু চাষ হয়েছে, ঝড়ে নষ্ট হলে না খেয়ে মরতে হবে।’’ আবহাওয়ার পূর্বাভাস পেয়ে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর, সোনামুখী, পাত্রসায়রে অনেকে ধান কাটতে নেমেছেন।

Advertisement

নানা জেলার কৃষি-কর্তাদের পরামর্শ, যে সব জমিতে ধান কাটার মতো পরিস্থিতি হয়েছে, তা দ্রুত কেটে ঘরে তুলতে হবে। জমিতে পর্যাপ্ত নিকাশির ব্যবস্থা রাখা দরকার। বৃষ্টির পরে রোগ দমনে ছত্রাকনাশক দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.