অগোচর: ভোরের রাস্তায় কুয়াশায় আচ্ছন্ন দৃষ্টিও। তার মধ্যেই চলাচল। শুক্রবার, এক্সপ্রেসওয়েতে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
শীতবস্ত্র নামেনি এখনও। কিন্তু কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়েছে উত্তর শহরতলির বেলঘরিয়া ও কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। ফলে দুই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে গাড়ি চলাচলে ঝুঁকিও বাড়ছে। এ জন্য গাড়িও চলছে আস্তে। শহরতলি এবং শহরকে জুড়ছে এক্সপ্রেসওয়ে। সেগুলির ধারে অনেক জায়গায় জলাজমি রয়েছে। সেখানেই তৈরি হচ্ছে কুয়াশার চাদর। হেড লাইটের ক্ষমতা নেই তা ভেদ করার।
বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে এবং কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে গত এক সপ্তাহে দশটি দুর্ঘটনায় বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। সৌজন্যে কুয়াশা। মৃত্যু না হলেও কম-বেশি জখম হয়েছেন চালকেরা। মহিষপোতা ও পানপুর এলাকা বাঁক থাকায় বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার ভোরেও কুয়াশায় মোড়া ছিল দুই এক্সপ্রেসওয়ে এবং বিটি রোড ও ব্যারাকপুর-বারাসত রোড। কুয়াশা চিন্তায় ফেলেছে গাড়িচালক ও টহলদারি পুলিশকে। আরএফএস (রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড)–এর পুলিশকর্মীরা জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়েও কুয়াশার জন্যে ঘটনাস্থলে যেতে সময় লাগছে।
নিমতা থেকে কল্যাণী এবং দক্ষিণেশ্বর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত কল্যাণী ও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের প্রধান সমস্যা আঁধার। বিক্ষিপ্তভাবে কিছু বাতিস্তম্ভে আলো জ্বললেও অন্ধকার ও কুয়াশায় সে আলো রাস্তায় পৌঁছয় না। ট্র্যাফিক পুলিশের হিসাব অনুযায়ী এই সময়ে এই দুই সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেশি। দুর্ঘটনাস্থলে যাতে দ্রুত পুলিশ পৌঁছতে পারে সে জন্য বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে ব্যারাকপুর ও বিধাননগর কমিশনারেট। দুই কমিশনারেটের হাইওয়ে টহলদারিতে থাকা পুলিশের গাড়িগুলিকে স্বল্প দূরত্বে রাখতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি ব্যারাকপুর পুলিশ দুর্ঘটনাপ্রবণ রাস্তাগুলি নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছে। দৃশ্যমানতা রাখার বিষয়ে আলোচনাও করেছে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, কালীপুজোর সময় থেকেই বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেশি। পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেশি থাকায় কুয়াশা কাটতে সময় লাগছে। রোদ উঠলেও কুয়াশার চাদর থেকেই যাচ্ছে।’’
কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ খুব একটা এগোয়নি। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে জুড়লে কলকাতা, বিমানবন্দরের সঙ্গে শিল্পাঞ্চলের দূরত্ব অনেকটা কমত। দুই রাস্তা জুড়তে নিমতায় জমি অধিগ্রহণ ও জরিপের কাজ শুরু হয়েও তা থমকে। তখন বেশ কিছু বাতিস্তম্ভ এবং রিফ্লেক্টর লাগানো হয়েছিল। কিছু চুরি হয়েছে, কিছু নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাতিস্তম্ভ থেকে চুরি হয়েছে মার্কারি ও ভেপার আলো। দুই রাস্তার দু’ধারে জলা এবং ফাঁকা জায়গা থাকায় রাত বাড়লেই কুয়াশা চেপে ধরতে শুরু করেছে। দুই রাস্তায় রয়েছে অনেক বাঁক। ফলে গতিতে নিয়ন্ত্রণ থাকে না চালকদের।
রাস্তায় কোনও দুর্ঘটনা নজরে পড়লে চালক-আরোহীরা মোবাইলে ছবি তুলে ব্যারাকপুর ও বিধাননগর দুই কমিশনারেটের ট্র্যাফিকের ফেসবুক পেজে জানাতে পারবেন— জানিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘এক্সপ্রেসওয়ে ও অন্য রাস্তাগুলি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। অন্ধকার ও কুয়াশাতেও যাতে বাঁক বোঝা যায় সে জন্য আলোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy