Advertisement
E-Paper

কলকাতায় রুচি নেই বিদেশি বিমান সংস্থার

সস্তাই কলকাতার ভবিতব্য! নামী-দামি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলি আগামী দিনে কলকাতা থেকে উড়ান চালাবে কি না, তা নিয়ে এখন ঘোর সংশয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৬ ০৩:২২

সস্তাই কলকাতার ভবিতব্য!

নামী-দামি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলি আগামী দিনে কলকাতা থেকে উড়ান চালাবে কি না, তা নিয়ে এখন ঘোর সংশয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। আড়াই হাজার কোটি টাকা দিয়ে নতুন টার্মিনাল তৈরি করে তাই ফাঁপরে পড়েছেন তাঁরা। রক্ষণাবেক্ষণের খরচ তুলতে হলে আরও বেশি বিমান সংস্থার কলকাতা থেকে উড়ান চালানো দরকার। অথচ নামকরা বিদেশি সংস্থাগুলিকে সেই অনুরোধ করলেই তারা কলকাতার যাত্রী সম্পর্কে বিশদ জানতে চাইছে। জানতে চাইছে, কত যাত্রী এখান থেকে বিজনেস ও প্রথম শ্রেণিতে ইউরোপ, আমেরিকা বা অন্য মহাদেশে যাতায়াত করছেন।

কলকাতা বিমানবন্দরের দায়িত্ব নেওয়ার পরে সম্প্রতি ফিলিপিন্সের ম্যানিলায় এক সম্মেলনে গিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কিছু বিদেশি বিমান সংস্থার প্রতিনিধির সামনে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে বিমানবন্দরের অধিকর্তা অতুল দীক্ষিতের। কলকাতা থেকে উড়ান চালানোর অনুরোধ করতেই ফিলিপিন্স এয়ারলাইন্স, এয়ার চায়না, এয়ার নিউজিল্যান্ডের মতো বড় সংস্থাগুলি কলকাতার যাত্রীদের ‘প্রোফাইল’ জানতে চেয়েছে।

অতুলের কথায়, ‘‘কলকাতায় প্রতি বছরই যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক উড়ানের যাত্রী বেড়েছে সাড়ে সাত শতাংশ। কিন্তু তাঁদের মধ্যে উচ্চ শ্রেণির যাত্রী কত জন, সেই হিসেব আমাদের নেই।’’ সম্প্রতি সেই হিসেব পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কারণ কোনও বিমান সংস্থাই তাদের উচ্চ শ্রেণির যাত্রী সংখ্যা জানাতে চায় না। কলকাতা থেকে সরাসরি ইউরোপের উড়ানও নেই। তাই অনেকেই দিল্লি-মুম্বই হয়ে চলে যান। সেই যাত্রীদের হিসেব পাওয়াও কঠিন।

শুধু মাত্র ইন্দোনেশিয়ার এক্সপ্রেস এয়ার কলকাতা থেকে উড়ান চালানোর আগ্রহ দেখিয়েছে বলে অতুল জানান। তবে সেটিও সস্তার বিমান সংস্থা হিসেবেই পরিচিত। বছর দুয়েক আগে তারা আন্তর্জাতিক রুটে উড়ান চালাতে শুরু করেছে। অতুল বলেন, ‘‘আমরা চিঠি পাঠিয়েছি। ওই সংস্থার তরফে কলকাতায় প্রতিনিধি পাঠিয়ে সমীক্ষা করে দেখার কথা।’’ কলকাতা থেকে ইন্দোনেশিয়ায় সরাসরি উড়ান নেই। চালু হলে ভ্রমণ-প্রিয় বাঙালির সুবিধা হবে।

কলকাতা থেকে আন্তর্জাতিক এমনকী, অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রেও এয়ার এশিয়া, চায়না ইস্টার্ন, ড্রাগন এয়ার, ইন্ডিগো-র মতো সস্তার বিমান সংস্থাগুলিই ভাল ব্যবসা করছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এমিরেটস, এতিহাদ, কাতার, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স নিয়মিত বিজনেস শ্রেণির যাত্রী পায় বলেই সূত্রের খবর। তারা যত উচ্চ শ্রেণির যাত্রী পায়, ছোট রুটেও উড়ান চালিয়ে লাভ করার জন্য তা যথেষ্ট বলে বিমান পরিবহণের বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন। কিন্তু কলকাতা থেকে ইউরোপের মতো দূর দেশের সরাসরি উড়ানে পেতে গেলে যত উচ্চ শ্রেণির যাত্রী প্রয়োজন, তা যে কলকাতা থেকে নেই, সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ বিদেশি বিমান সংস্থাগুলি।

এই একই কারণে অনেক আগেই কলকাতা থেকে মুখ ফিরিয়ে চলে গিয়েছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, লুফৎহানসা। এখন কলকাতা থেকে ইউরোপের সরাসরি কোনও উড়ানই নেই। সম্প্রতি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তাদের চিঠি দিয়ে ফিরে আসার অনুরোধ করা হয়েছিল। তাতেও সদর্থক সাড়া মেলেনি। তারা জানিয়েছে, কলকাতা থেকে বিজনেস ও প্রথম শ্রেণির যথেষ্ট যাত্রী নেই। এর মূল কারণ, রাজ্যে শিল্প নেই। এমনকী, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা এয়ার ইন্ডিয়াও তাদের কলকাতা-লন্ডন সরাসরি উড়ান বন্ধ করে দিয়েছে। নতুন করে উড়ান চালানোর অনুরোধ তারাও ফিরিয়ে দিয়েছে।

ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব সিংহের মতে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা পূর্ব ভারতই দেশের অন্য অংশের চেয়ে পিছিয়ে। এখানে আর্থিক বিকাশের পরিবেশ নেই, মাথা পিছু আয় কম, বিনিয়োগও কম।

airlines kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy