Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
উচ্চ-মাধ্যমিকে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত আয়োশি, সদ্যোজাতকে পাশে নিয়ে তনুজাও

জীবন-যুদ্ধের সঙ্গী সদ্যোজাতর জননীও

জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই। সেই সঙ্গে পড়াশোনায় সফল হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানো। এই দুই লড়াইকে সামনে রেখেই এ বার উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছে ইংরেজবাজার শহরের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ছাত্রী আয়োশি সাটিয়ার।

লড়াকু: ছ’ঘণ্টার সন্তানকে কোলে নিয়েই পরীক্ষায় তনুজা। —নিজস্ব চিত্র।

লড়াকু: ছ’ঘণ্টার সন্তানকে কোলে নিয়েই পরীক্ষায় তনুজা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৭
Share: Save:

জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই। সেই সঙ্গে পড়াশোনায় সফল হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানো। এই দুই লড়াইকে সামনে রেখেই এ বার উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছে ইংরেজবাজার শহরের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ছাত্রী আয়োশি সাটিয়ার।

শুক্রবার ছিল সংস্কৃত পরীক্ষা। আয়োশি জানিয়েছে, পরীক্ষা ভালই হয়েছে। মালদহের বার্লো বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সে। পরীক্ষার সিট পড়েছে শহরেরই চিন্তামণি চমৎকার বালিকা বিদ্যালয়ে। অসুস্থতার কারণে সংসদ কর্তৃপক্ষ স্কুলেই তাঁর আলাদা ঘরে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন। আয়োশি নিজেই রাজি হয়নি। আর পাঁচ জন বন্ধুর সঙ্গে ক্লাসরুমের বেঞ্চে বসেই সে পরীক্ষা দিয়েছে।

আয়োশির বাবা ফুলবাড়ি মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা পেশায় কেবল ব্যবসায়ী অসীম সাটিয়ার বলেন, মাত্র তিন মাস বয়সেই মেয়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়। সামান্য আয়ে মেয়ের জন্য প্রচুর চিকিৎসা করা হয়েছে। আগে মাসে ২১ দিন পরপর রক্ত নিতে হতো, এখন মাসে দু’বার করে রক্ত নিতে হয়। পরীক্ষার সময়ে শরীর যাতে সুস্থ থাকে সে জন্য ১২ তারিখই কলকাতা থেকে গিয়ে দু’বোতল রক্ত দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। অসীমবাবু ও আয়োশির মা পম্পাদেবী জানালেন, আয়োশির ইচ্ছে ভাল চাকরি করার। সেই লক্ষ্যেই সে এগিয়ে চলেছে।

এ দিকে ভোর রাতে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন তনুজা খাতুন। তার ঘণ্টা ছয়েক বাদেই সদ্যোজাতকে নিয়ে পরীক্ষা দিলেন চাঁচলের এলাঙ্গির ওই বাসিন্দা। এ দিন ছিল আরবি পরীক্ষা। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে। অবসন্ন শরীরে তনুজা বললেন, ‘‘পরীক্ষা প্রায় শেষ। সারা বছর সংসার সামলে পড়াশোনা করেছি। পরীক্ষা বাদ দিলে গোটা বছরটাই তো নষ্ট হয়ে যাবে।’’

তনুজা চাঁচলের ধানগাড়া বিষ্ণুপুর হাই মাদ্রাসার কলা বিভাগের ছাত্রী। সিট পড়েছে গোবিন্দপাড়া হাই স্কুলে। বছর দেড়েক আগে গ্রামেরই পেশায় কৃষক তারিকুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় তনুজার। বাবা মহম্মদ আলাউদ্দিনও কৃষিজীবী। কিন্তু বিয়ে হলেও পড়া বন্ধ করেননি তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Thalassemia Higher Secondary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE