Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
C V Ananda Bose

‘নির্বাচনী বিধি ভেঙেই চলেছেন রাজ্যপাল’, নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিল তৃণমূল

চিঠিতে জানানো হয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রাজ্যে যে আদর্শ আচরণবিধি জারি রয়েছে, তা লঙ্ঘন করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।

CV Ananda Bose.

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৩ ০০:০১
Share: Save:

আবারও শাসকদল বনাম রাজ্যপাল দ্বন্দ্ব। সোমবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানাল তৃণমূল। দলের সহ-সভাপতি সুব্রত বক্সী চিঠি লিখে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রাজ্যে যে আদর্শ আচরণবিধি জারি রয়েছে, তা লঙ্ঘন করেছেন রাজ্যপাল। চিঠিতে রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।

চিঠিতে মূলত চারটি বিষয় নিয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। এক, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেছেন রাজ্যপাল। হিংসা কবলিত এলাকায় গিয়ে সরকারি বাসভবন, সার্কিট হাউসে থেকে তিনি বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করছেন নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। যা পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত নির্বাচন আইন ২০০৩-এর পরিপন্থী। দুই, নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে ‘অযাচিত’ মন্তব্য এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। তিন, কমিশনের পবিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি, নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে অনধিকার চর্চা করছেন তিনি। স্থানীয় বিডিওর সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করছেন। পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকদের ডেকে আইনব্যবস্থা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এ ছাড়াও নির্বাচন প্রক্রিয়া তদারকি করার জন্য রাজভবনে ‘কন্ট্রোল রুম’ স্থাপন করার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। চার, রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে বিজেপি সদস্যদের জন্য আলাদা করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এই চার বিষয়ে অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখেছেন বক্সী।

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর মনোনয়ন জমার দিন থেকেই বিভিন্ন হিংসার সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। প্রাণ হারিয়েছেন শাসক, বিরোধী দুই পক্ষেরই লোকজন। উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে যে দুই জেলায় বার বার হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তার একটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা। অন্যটি কোচবিহার। সেই সকল হিংসা কবলিত এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছেন রাজ্যপাল। প্রথমে দক্ষিণ ২৪ পরগনার হিংসা কবলিত ভাঙড়, ক্যানিং পরিদর্শন করেছেন। রাজভবনে নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে খুলেছেন ‘শান্তিকক্ষ’। তার পর গত শনিবার কোচবিহার ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল। সোমবার সকালেই কোচবিহার থেকে ফিরে সড়কপথে বাসন্তীর গাগরামারি গ্রামে পৌঁছন। সেখানে তিনি কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। বার্তা দিয়েছেন, মানুষের রক্ত দিয়ে ‘রাজনৈতিক হোলি’ খেলা বন্ধ করতে হবে। হিংসা বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিলেন। তার পরেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আদর্শ নির্বাচনবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাল তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE