Advertisement
১১ মে ২০২৪
Pradhan Mantri Aawas Yojna

নিজেরা না ফেরালেও হাসিনুদ্দিনদের নাম আবাসের তালিকা থেকে বাদ যেতে পারত

অভিষেক জানিয়েছিলেন, ‘‘এঁরাই তৃণমূলের গর্ব।” দেখা যাচ্ছে, নিজেরা না ফেরালেও নিয়মের গেরোতেই হয়তো হসিনুদ্দিনদের নাম আবাস যোজনার উপভোক্তা তালিকা থেকে বাদ পড়ত। কারণ কী?

Sheikh Hasinuddin and his wife Ilina Begum.

শেখ হসিনুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী ইলিনা বেগম। নিজস্ব চিত্র।

  বরুণ দে
কেশপুর শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩৮
Share: Save:

গত শনিবার কেশপুরের সভায় তিন জনকে মঞ্চে তুলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, ওই তিন জন, শেখ হসিনুদ্দিন, মঞ্জু দলবেরা ও তাঁর স্বামী, মাটির বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনার বাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছেন। অভিষেক জানিয়েছিলেন, ‘‘এঁরাই তৃণমূলের গর্ব। এঁরাই নতুন তৃণমূল।’’

দেখা যাচ্ছে, নিজেরা না ফেরালেও নিয়মের গেরোতেই হয়তো হসিনুদ্দিনদের নাম আবাস যোজনার উপভোক্তা তালিকা থেকে বাদ পড়ত। কারণ, তাঁদের পরিজন ইতিমধ্যে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পেয়েছেন।

সূত্রের খবর, সেই গেরোতে আটকে যেতে পারতেন হসিনুদ্দিন। কারণ, হসিনুদ্দিনের এক ভাই নবাবউদ্দিনের নামে আগেই গীতাঞ্জলি প্রকল্পে‌ বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। নবাবউদ্দিন মানছেনও, ‘‘কয়েক বছর আগে একটা ঘর পেয়েছিলাম।’’ যদিও হসিনুদ্দিনের দাবি, ‘‘আমাদের কারও নামে এর আগে সরকারি কোনও প্রকল্পে বাড়ি বরাদ্দ হয়নি। এ বারই আমার নামে বাড়ি এসেছিল। ’’

প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূলের পঞ্চয়েত সদস্য মঞ্জু দলবেরার শাশুড়ি দুর্গারানিও কি সরকারি ঘর পেতেন? কারণ, দুর্গারানির এক ছেলে সুজিতের নামে আগেই সরকারি প্রকল্পে বাড়ি বরাদ্দ হয়েছিল। মঞ্জুর স্বামী, তৃণমূলের বুথ সভাপতি অভিজিৎ মানছেন, ‘‘আমার ভাইয়ের নামে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বাড়ি বরাদ্দ হয়েছিল। তবে এখন ভাই আলাদা থাকে। মা আমাদের সঙ্গে থাকেন।’’ গীতাঞ্জলি প্রকল্পের ওই বাড়িও অসম্পূর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে? মঞ্জুর জবাব, ‘‘ওই সামান্য টাকায় কি বাড়ি হয়! তাই বাড়ি নিইনি।’’

নিয়মমতো তো পরিবারের এক জন বাড়ি পেলে আর কেউ পাবেন না। আপনি নিজে পঞ্চায়েত সদস্য। তা-ও দেওরের নামে বাড়ি বরাদ্দের পরে আপনার শাশুড়ির নাম আবাসের তালিকায় উঠল কী ভাবে? মঞ্জুর ব্যাখ্যা, ‘‘বছর পাঁচেক আগে অঞ্চলে সমীক্ষা হয়েছিল। তখনই তালিকায় নাম উঠেছিল। আমরা কিন্তু কোথাও আবেদন করিনি।’’ কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি বলছেন, ‘‘একান্নবর্তী পরিবার ছিল। পরে পরিবার ভেঙে ছোট হয়েছে। ওঁদের নাম পোর্টালে উঠেছিল। ওঁরা স্বেচ্ছায় বাড়ি ফিরিয়েছেন।’’ জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাসের পাল্টা খোঁচা, ‘‘নিয়ম সবার জন্য এক। আর যুবরাজ তো কেশপুরের দু’জনের বাড়ির ছবি না-দেখিয়ে সভা থেকে নিজের বাড়ির ছবিটা দেখাতে পারতেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pradhan Mantri Aawas Yojna TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE