ঠেকে বসে চোলাই খেয়েছিলেন ময়না থানার আড়ংকিয়ারানা গ্রামের বেশ কয়েক জন। শনিবার রাত থেকেই পেট ও মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি হতে শুরু করেন তাঁরা। এর মধ্যে রবিবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ১৫ জন। বারবার মৃত্যু মিছিলের পরেও যে বিষ মদের কারবারে রাশ টানা যায়নি, এ দিনের ঘটনা ফের তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বলে মনে করছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
তবে চোলাই খেয়েই মৃত্যু কি না তা নিয়ে নিশ্চিত নয় পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ-প্রশাসন। জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ময়নার আড়ংকিয়ারানা এলাকায় কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে কী কারণে এমন ঘটনা তা নিশ্চিত নয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ জেলাশাসক অন্তরা আচার্য জানিয়েছেন, মৃত ও অসুস্থরা যা খেয়েছিলেন তার নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আড়ংকিয়ারানা এলাকার বাজারের কাছে একাধিক চোলাই মদের ঠেকে গত শুক্রবার ও শনিবার রাতে মদ খেয়েছিলেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন মাথা ও পেটে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে শনিবার সকাল থেকেই ভর্তি হন তমলুক জেলা হাসপাতালে। এর মধ্যে শনিবার দুপুরে মারা যান কিয়ারানা গ্রামের বাসিন্দা দীপক সিংহ (৩৫)। রবিবার একে একে মৃত্যু হয় মানিক ধর (৫০), শঙ্খ বাইচার (৪৪), রাজু মেইকাপ (৩২) ও চিন্ময় মাইতি (৪৫)-র।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আড়ংকিয়ারানা গ্রামের বাসিন্দা শ্যামাপদ ভুঁইয়া বলেন, ‘‘শনিবার রাতে আমরা চারজন চোলাই খেয়েছিলাম। রাতে বাড়ি ফেরার পর থেকে অসম্ভব মাথা আর পেটের যন্ত্রণা। তারপরই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।’’ জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক শুভাশিস জানা বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে খাবারে বিষক্রিয়ার জেরেই এমন ঘটনা। তবে সেই বিষক্রিয়ার কারণ চোলাই কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’’
রবিবার ময়নার এই ঘটনার পরও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আড়ংকিয়ারানা বাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চার-পাঁচটি চোলাই মদের ঠেক চলছে। পুলিশ সেই ঠেক বন্ধ করতে কোনও ব্যবস্থাও নেয় না। তার জন্যই এমন ঘটনা। আর জেলা আবগারি দফতরের এক কর্তার দায়সারা জবাব, ‘‘‘খবর পেলেই সেই এলাকায় গিয়ে চোলাই ঠেক ভেঙে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রেও সেই একই কাজ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy