Advertisement
০৪ মে ২০২৪
লাইন কমাতে মমতার পরামর্শ

ফের আবশ্যিক হতে পারে হাউসস্টাফশিপ

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব অনিল বর্মা-সহ স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তারা এবং সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ, সুপার, বিভাগীয় প্রধানেরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৮ ০৪:১৯
Share: Save:

পরিষেবার জন্য অপেক্ষার লাইন কমাতে তিন দাওয়াই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী!

চিকিৎসকদের ‘হাউসস্টাফশিপ’ বাধ্যতামূলক করা, বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের দিয়ে কী ভাবে সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করানো যায়, সেটা দেখার জন্য কমিটি তৈরি এবং ক্লিনিক্যাল বিষয়ের চিকিৎসকদের বহির্বিভাগে রোগী দেখার দায়িত্ব দেওয়া। মঙ্গলবার নবান্নে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠকে এই তিন পরামর্শ দিলেন মমতা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব অনিল বর্মা-সহ স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তারা এবং সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ, সুপার, বিভাগীয় প্রধানেরা।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের ঘাটতি মেটাতে হাউসস্টাফশিপ বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। এমবিবিএস কোর্সের ইন্টার্নশিপ করার পরে এক বছর কোনও বিভাগের জুনিয়র চিকিৎসক হিসাবে হাউসস্টাফশিপ করা হয়। বছর পনেরো আগেও এটা বাধ্যতামূলক ছিল। চিকিৎসক হিসাবে কোনও হাসপাতালে যোগদানের আগে হাউসস্টাফ হিসাবে কাজের মান বিবেচনা করা হত।

বৈঠকে উপস্থিত হাসপাতাল কর্তাদের একাংশ জানান, রোগী পরিষেবায় দেরি এবং চিকিৎসক ঘাটতির দিকেই এ দিনের বৈঠকে সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন মমতা। তাই দ্বিতীয় দাওয়াই হিসেবে ‘ক্লিনিক্যাল বিষয়’-এর চিকিৎসকদের বহির্বিভাগে রোগী দেখা এবং জরুরি বিভাগের দায়িত্ব সামলানোর পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফার্মাকোলজি, বায়োকেমিষ্ট্রি কিংবা অ্যানাটমির মতো ক্লিনিক্যাল বিষয় নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করা চিকিৎসকেরাও যাতে
রোগী দেখেন তা নিয়ে এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে স্নায়ু কিংবা কার্ডিয়োথোরাসিকের মতো অস্ত্রোপচার করতে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় সাত-আট মাস সময় কেটে গেলেও অস্ত্রোপচারের সুযোগ পাওয়া যায় না। রোগীর চাপের তুলনায় চিকিৎসকের অভাবের জেরেই এই সমস্যা। তাই স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিদেশে থাকা চিকিৎসকদের আহ্বান জানানো হবে। একটি কমিটি তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জরুরি অস্ত্রোপচার করতে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিয়ে গিয়ে কী ভাবে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ঘাটতি মেটানো যায়, সে নিয়েই বিশ্লেষণ করবে ওই কমিটি।

বাইরের রাজ্য থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার পরিবর্তে ভর্তুকিযুক্ত পরিষেবা কী ভাবে চালু করা যায়, তা নিয়ে একটি সুসংহত নীতি তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে খবর, বৈঠকে রোগী কল্যাণ সমিতি সম্পর্কে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন মমতা। তাঁর মতে, হাসপাতালের নির্মাণ-সহ বিভিন্ন কাজের বরাতের বদলে রোগী পরিষেবার দিকে গুরুত্ব দিক সমিতি। স্বাস্থ্যসচিবের কাজের ঢালাও প্রশংসা করলেও তাঁর ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করেন মমতা। পাশাপাশি বিআইএন-এর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দালাল চক্র বন্ধ করা ও হাসপাতালের যন্ত্র নিয়ে বাড়তি সতর্কতার কথাও তিনি বলেন। হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের সুরক্ষা বজায় রাখতে পুলিশকে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আড়াই ঘণ্টা ধরে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কী ভাবে সকলের মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে রোগী পরিষেবাকে আরও উন্নত করা যায়, সে নিয়েই আলোচনা হল।’’

চিকিৎসকের ঘাটতি মেটাতে তিন দাওয়াই


ফের হাউসস্টাফ হওয়া বাধ্যতামূলক করা


ক্লিনিক্যাল বিষয়ে স্নাতকোত্তর চিকিৎসকদের বহির্বিভাগ সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া


বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাজে লাগানোর জন্য কমিটি তৈরি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

House staffship Medical মেডিক্যাল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE