Advertisement
২২ মার্চ ২০২৩
Boy

বিজ্ঞান উৎসবে চতুর্থবারেও সফল চুঁচুড়ার কিশোর, ডাক মার্কিন মুলুকে

হুগলির কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র অভিজ্ঞানের এই ছবিই প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছে। তার আগেও ছবিটি একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে সমাদৃত ও পুরস্কৃত হয়েছে।

Picture of Kishor Das.

স্বীকৃতি: শংসাপত্র ও পুরস্কার হাতে অভিজ্ঞান। ছবি: তাপস ঘোষ

সুদীপ দাস
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:১০
Share: Save:

এই নিয়ে পরপর চারবার বিজ্ঞান সংক্রান্ত কাজে ভারতের ‘আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসব’-এ পুরস্কৃত হয়ে নজির গড়ল চুঁচুড়ার নারকেলবাগানের অভিজ্ঞান কিশোর দাস। এ বার একইসঙ্গে মার্কিন মুলুক থেকেও ডাক এসেছে ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর।

Advertisement

কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক যৌথ ভাবে এ বার অষ্টম বর্ষের ওই উৎসবের আয়োজন করেছিল ভোপালে। চারদিনের (২১-২৪ জানুয়ারি) উৎসবে অভিজ্ঞান যোগ দিয়েছিল বিজ্ঞান-সাহিত্য বিষয়ক বিভাগ ‘বিজ্ঞানিকা’ তে। প্রতিযোগিতায় স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি চাওয়া হয়েছিল। বিষয় ছিল— ‘ভারতীয় বিজ্ঞানীদের স্মরণীয় কোনও ঘটনা, যা আমাদের অনুপ্রাণিত করে’। অভিজ্ঞান আগেই তৈরি করেছিল ‘আধুনিক ভারতের সুশ্রুত’ নামে ১০ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র। যা বৈদ্যবাটীর আয়ুর্বেদ চিকিৎসক পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্তের জীবনী। উনিশ শতকে যিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করে দেখে শল্যচিকিৎসার পথ প্রদর্শন করেছিলেন। একইসঙ্গে ওই তথ্যচিত্রে অভিজ্ঞান তুলে ধরেছে তৎকালীন গোঁড়া হিন্দু সমাজের কুসংস্কারগুলিকেও।

হুগলির কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র অভিজ্ঞানের এই ছবিই প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছে। তার আগেও ছবিটি একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে সমাদৃত ও পুরস্কৃত হয়েছে। ক’দিন আগে মার্কিন মুলুকের ‘ফিলাডেলফিয়া যুব চলচ্চিত্র উৎসব’-এর ‘ফিল্ম মেকার্স প্যানেলে’ বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণও পেয়েছে অভিজ্ঞান। আগামী ফেব্রুয়ারিতে আয়োজিত এই উৎসবে তার তথ্যচিত্রকে পুরস্কৃত করা হবে বলেও অভিজ্ঞানের দাবি।

এমন নজরকাড়া সাফল্যে বেজায় আনন্দিত বছর পনেরোর অভিজ্ঞান। তার ইচ্ছে দেশে বা রাজ্যের কোথাও মধুসূদনের স্মৃতিতে অন্তত একটি বড় হাসপাতাল তৈরি করা হোক। তার একটাই আফশোস, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকার জন্য আমেরিকার অনুষ্ঠানে যেতে পারব না। অনলাইনে যোগ দিতে পারব। কিন্তু সে সময় পরীক্ষা থাকবে।’’

Advertisement

২০১৯-এ ওই কেন্দ্রীয় উৎসবের প্রতিযোগিতায় প্রথমবার যোগ দিয়েছিল অভিজ্ঞান। সে বার কলকাতার বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় তার তৈরি গাড়ির দূষণ প্রতিরোধক যন্ত্র 'সেফ পলিউট্যান্ট' প্রথম পুরস্কার ছিনিয়ে নেয়। পরের বছর কোভিড-পর্বে ভার্চুয়ালি আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় শহরের জীববৈচিত্র নিয়ে তৈরি তার ‘সিলভার লাইনিং’ ছবিটি প্রথম স্থান অধিকার করে। ২০২১-এ গোয়ায় আয়োজিত একই প্রতিযোগিতায় তাঁর 'পোর্টেবল অটোমেটিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার’ও প্রথম হয়। ওই আবিষ্কারের জন্য সে ভারত সরকারের কাছ থেকে পেটেন্টও পেয়েছে।

চতুর্থবারও ছেলে সফল হওয়ায় বাবা অনিন্দ্যকিশোর দাস ও মা প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘‘ছেলের এ ধরনেরর সৃষ্টিশীল কাজে আমরা সব সময়ই সাধ্যমতো পাশে থাকার চেষ্টা করি। ভবিষ্যতে ও যেন মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারে।’’

উচ্ছ্বসিত অভিজ্ঞানের স্কুলের শিক্ষকেরাও। ভূগোলের শিক্ষক নিতাই ঘোষ বলেন, ‘‘অভিজ্ঞান আমাদের প্রিয় ছাত্র। এই বয়সে সে বিদ্যালয় এবং বিদ্যালয়ের বাইরে বিভিন্ন বিজ্ঞান বিষয়ক কর্মসূচিতে দক্ষতা দেখিয়েছে। এ বারে দেশ ছাড়িয়ে ওর তৈরি চলচ্চিত্র মার্কিন মুলুকে সমাদৃত হতে চলেছে। এটুকু বলতে পারি, অভিজ্ঞানের জন্য আমাদের স্কুল দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পরিচিতি পাবে। বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষিকার পক্ষ থেকে ওর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। বিজ্ঞান নিয়ে এগিয়ে চলুক অভিজ্ঞান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.