E-Paper

ঘর ভেঙেছে রেমাল, পড়শির বারান্দায় আশ্রয় মহিলার

সুনীতার কথা মানতে নারাজ পঞ্চায়েত প্রধান সত্যজিৎ মণ্ডল। তাঁর বক্তব্য, নির্বাচন বিধি কার্যকর থাকায় ত্রাণ সংক্রান্ত বিষয় ব্লক কার্যালয়ই দেখছে।

সুব্রত জানা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৪ ০৯:১৩
ভাঙা বাড়ির সামনে শ্যামলী দাস।

ভাঙা বাড়ির সামনে শ্যামলী দাস। নিজস্ব চিত্র।

খালের ধারে টালির চাল দেওয়া মাটির বাড়ি। রেমালের দাপটে ভেঙে গিয়েছে ঘরের একাংশ। ফলে, উলুবেড়িয়া ২ ব্লকের বাণীবন পঞ্চায়েতের গোয়ালবেড়িয়া গ্রামের ওই বাড়ির কর্ত্রীকে রাত কাটাতে হচ্ছে প্রতিবেশীর বারান্দায়। তাঁর দুই যুবক ছেলে কোনও রকমে ভাঙা বাড়ির একাংশে মাথা গুঁজে থাকছেন। তাঁদের অভিযোগ, বার বার দরবার করেও সরকারি প্রকল্পের বাড়ি জোটেনি। রবিবারে দুর্যোগের পরে পঞ্চায়েতে একটি ত্রিপল চেয়েও মেলেনি।

শ্যামলী দাস নামে বছর পঞ্চান্নর ওই মহিলার দুরবস্থার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা বিজেপির সুনীতা মণ্ডল। তবে, ওই পরিবারকে সাহায্য করার ব্যাপারে তিনি নিজের অসহায়তার কথা জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের পরে পঞ্চায়েত বা ব্লক কার্যালয় থেকে কোনও ত্রাণ পঞ্চায়েত সদস্যদের হাতে দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া, আমরা বিজেপির সদস্য হওয়ায় শাসকদল পরিচালিত পঞ্চায়েত সেই ভাবে আমাদের গুরুত্ব বা কাজ দেয়নি। ত্রাণ নিয়েও তৃণমূল রাজনীতি করে।’’

সুনীতার কথা মানতে নারাজ পঞ্চায়েত প্রধান সত্যজিৎ মণ্ডল। তাঁর বক্তব্য, নির্বাচন বিধি কার্যকর থাকায় ত্রাণ সংক্রান্ত বিষয় ব্লক কার্যালয়ই দেখছে। এই বিষয়ে পঞ্চায়েতের কোনও হাত নেই। তাঁর সংযোজন, ‘‘বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ করছে। পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজ সমান ভাবে বণ্টন করা হয়। কোনও দল দেখা হয় না।’’ রেমালে শ্যামলীর বাড়ির ক্ষতি নিয়ে বিডিও অভিজ্ঞা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নেব।’’

শ্যামলী জানান, বনস্পতি খালের ধারে মাটির বাড়িতে দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি থাকেন। দু’টি ঘর। বছর দুয়েক আগে স্বামী গোবিন্দ দাস মারা যান। শ্যামলী ১০০ দিনের কাজ করতেন। সেই কাজ এখন বন্ধ। দুই ছেলের দিনমজুরির আয়ে কোনও রকমে সংসার চলে। শ্যামলী বলেন, ‘‘রবিবার রাতে ঝড়বৃষ্টিতে বাড়ির একটা অংশ ভেঙে গেল। বাধ্য হয়ে পাশের একটি বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছি। ছেলেরা কোনও রকমে বাড়িতেই থাকছে। পঞ্চায়েতে, ব্লক অফিসে আবেদন করেও ত্রিপল মেলেনি। এ ভাবে থাকা যায়! কত দিন পরের বারান্দায় রাত কাটাব!’’

সামনে বর্ষা। তারও আগে-পরে কালবৈশাখী এসে ঘরের আরও ক্ষতি করতে পারে, এই আশঙ্কাও রয়েছে শ্যামলীর। তাঁর খেদ, আবাস যোজনায় ঘরের জন্য আবেদন করেও মেলেনি। পঞ্চায়েতের তরফে বারে বারে বলা হয়েছে, তালিকায় নাম আছে। ব্যস, ওই পর্যন্তই। ঘর কবে হবে, সদুত্তর পাননি।

প্রশাসনের একটি সূত্রের বক্তব্য, আবাসের তালিকায় শ্যামলীর নাম রয়েছে। তবে ওই প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ। পরে চালু হলে তখন বিষয়টি দেখা হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Uluberia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy