প্রতীকী চিত্র
হাওড়ায় যক্ষ্মা রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করতে বাড়ি বাড়ি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কারণ, গত বছর জেলায় যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা (২৫৩৩ জন) আচমকা অনেকটা কমে গিয়েছে। যা কিছুটা ‘অস্বাভাবিক’ ঠেকছে জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে।
জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের অনুমান, করোনা আবহের জন্য যক্ষ্মার উপসর্গ থাকা বহু মানুষ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসেননি। ফলে, তাঁদের থুথু পরীক্ষা করা যায়নি। সেই কারণে জেলায় গত বছর কম যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করা গিয়েছে।
যক্ষ্মা প্রতিরোধে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নোডাল অফিসার সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত বছর করোনা আবহের জন্য থুথু পরীক্ষার পরিকাঠামোর বেশ কিছুটা ব্যবহার করা হচ্ছিল করোনা পরীক্ষার জন্য। সেই কারণে মূলত কর্মীর অভাব দেখা দিয়েছিল। তা ছাড়া, করোনা আবহের জন্য বহু মানুষ নিজে থেকে হাসপাতালে আসেননি। সম্প্রতি যক্ষ্মা বিভাগে চুক্তির ভিত্তিতে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। তাই ব্যাপক ভাবে থুথু পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন, বাড়ি বাড়ি পরীক্ষার পরেও যদি দেখা যায় যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা কমতির দিকেই, তা হলে মানতে হবে এর পিছনে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার এবং শারীরিক দূরত্ব-বিধি ভাল কাজ করেছে। সেটা হলে তাকে একটা ‘বড় ঘটনা’ হিসেবে দেখতে হবে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘যক্ষ্মা ভয়ঙ্কর সংক্রামক রোগ। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, করোনার সুরক্ষা-বিধির সুফল শুধু করোনা সংক্রমণ রুখে দেওয়ার ক্ষেত্রেই মেলেনি, যক্ষ্মাও কমেছে। এমনও হতে পারে, যক্ষ্মার উপসর্গ দেখা দেয়নি বলেই অনেক মানুষ হাসপাতালে আসেননি। তারই প্রতিফলন ঘটেছে গত বছর যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণের হারে।’’ তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসার আগে আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করা দরকার বলে তিনি জানান।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কোনও এক বছরে যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে পরবর্তী বছরে যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণের লক্ষ্যমাত্রা দেয় স্বাস্থ্যভবন। সেই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী যক্ষ্মার উপসর্গ নিয়ে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাঁরা আসেন, তাঁদের থুথু পরীক্ষা করে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। এ বারে একইসঙ্গে গ্রামে গ্রামে আশাকর্মীদেরও যক্ষ্মার উপসর্গ আছে এমন মানুষদের বাড়িতে গিয়ে থুথু সংগ্রহ করে আনতে বলা হয়েছে। একজন আশাকর্মীকে মাসে অন্তত পাঁচ জনের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আনতে হবে। তা পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে জেলায় যক্ষ্মা রোগীর প্রকৃত সংখ্যা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy