Advertisement
০২ মে ২০২৪
Ferry Ghat

অভিষেকের আশ্বাস সার, ফেরিঘাটে মাসুল লাগছেই

ফেরিঘাট পারাপারের মাসুল নিয়ে সবচেয়ে সরব খানাকুল-২ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। নদ-নদী ঘেরা ব্লক এলাকায় দৈনন্দিন কাজে বাড়ি থেকে বের হলেই একাধিক ফেরিঘাট পারাপার করতে হয়।

খানাকুলের গণেশপুর ফেরিঘাট। নিজস্ব চিত্র

খানাকুলের গণেশপুর ফেরিঘাট। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খানাকুল শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:১৩
Share: Save:

আরামবাগ মহকুমায় ফেরিঘাট পারাপারে কৃষকের কৃষিপণ্যের মাসুল নেওয়া হবে না। ছাড় দেওয়া হবে রোগীদেরও। গত জুন মাসের ৭ তারিখে আরামবাগের তেলুয়ায় ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে এসে এমনই আশ্বাস দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং পরের দিন থেকেই তা যাতে লাগু করা যায় সেই অনুযায়ী সভা মঞ্চেই পরিবহণ মন্ত্রীকে অনুরোধও করেন। কিন্তু তা এখনও কার্যকরী হয়নি বলে অভিযোগ।

পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “ফেরিঘাটগুলো পঞ্চায়েত সমিতি বা পঞ্চায়েতগুলি পরিচালনা করে। সদ্য বোর্ড গঠন হল। আমরা সরকারি নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিচ্ছি। সেই অনুযায়ী তারা সিদ্ধান্ত নেবে।” তিনি জানান, সমস্ত ফেরিঘাটগুলিতে নির্ধারিত মূল্য তালিকা টাঙাতে বলা হবে। এছাড়া ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা যাঁরা মাথায় এবং সাইকেলে (ট্রাক্টরে নয়) কৃষিপণ্য পারাপার করবেন, তাদের কোনও টাকা না দেওয়ার ভাবনাও রয়েছে।

ফেরিঘাট পারাপারের মাসুল নিয়ে সবচেয়ে সরব খানাকুল-২ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। নদ-নদী ঘেরা ব্লক এলাকায় দৈনন্দিন কাজে বাড়ি থেকে বের হলেই একাধিক ফেরিঘাট পারাপার করতে হয়। সেই পারাপারে মাসুল এখনও নিয়ন্ত্রণ না হওয়ায় মাস খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিহিত চেয়ে ব্লক এলাকার ‘নাগরিক মঞ্চ’ থেকে চিঠি দেওয়া হলেও এখনও কোনও সুরাহা মেলেনি। মঞ্চের তরফে পরেশ কোটাল, বিদ্যুৎ সামন্তর অভিযোগ, ‘‘ঘর থেকে চাষের জমিতে যেতেও ফেরিঘাট পার হতে হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতেও ফেরিই ভরসা। অথচ সেই সব বাঁশের বা কাঠের সাঁকো পার হতে গত বছরের মাসুলের তুলনায় দ্বিগুণ নেওয়া হচ্ছে।’’

তাঁরা জানান, মাথা পিছু সাইকেল নিয়ে পারাপারে গত বছর ছিল ৩ টাকা, এ বার সেখানে নেওয়া হচ্ছে ৭ টাকা। শুধু মোটরবাইকে ৭ টাকার জায়গায় ১৩-১৪ টাকা। চার চাকা গাড়ির ক্ষেত্রে ২০ টাকা নেওয়া হত। এ বছর গাড়ির আকার এবং ভার নিজেরা বিচার করে নেওয়া হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত।

পারাপারের যথেচ্ছ মাসুল নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রক্তিম চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, “ফেরিঘাট পিছু বাঁশের ও কাঠের সাঁকোতে রোগীদের টোটোতে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা করে। চিকিৎসকদেরও ছাড় নেই। দু’টি নদী পারাপার করতেই রোগীর ১২০ টাকা খরচ হচ্ছে। এই অব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বন্ধ্যাকরণ, প্রসবের মতো পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনের নজরেও আনা হয়েছে।”

বিভিন্ন ফেরিঘাট মালিকদের মধ্যে গণেশপুর ফেরিঘাট মালিকদের অন্যতম চন্দন অধিকারী বলেন, “সরকারি তরফে কোনও ক্ষেত্রে মাসুল ছাড় নিয়ে লিখিত নেই। তবু আমাদের তরফে কৃষিপণ্যে মাসুল চেয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে না। রোগী এবং চিকিৎসকদের ক্ষেত্রেও তা নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে।” তিনি জানান, নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

মহকুমাশাসক সুভাষিণী ই বলেন, “ঘাট ইজারা দেওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতি একটি কমিটি গঠন করে মাসুল বেঁধে দিয়েছে। কেউ বেশি নিলে নির্দিষ্ট করে লিখিত অভিযোগ করতে বলেছি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khanakul
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE