Advertisement
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Firecrackers

বাজির ক্লাস্টার নিয়ে  প্রশ্ন পরিবেশকর্মীদের

বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চের বক্তব্য, বাজি পোড়ানোর সময় যেখানে নির্দিষ্ট, সেখানে সর্বত্র ক্লাস্টার গড়ে কী লাভ?

দোলের সময় বাজি পোড়ানো হচ্ছে। ফাইল ছবি

দোলের সময় বাজি পোড়ানো হচ্ছে। ফাইল ছবি

প্রকাশ পাল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৩ ০৯:২৮
Share: Save:

এগরা ও বজবজে বাজি-বিস্ফোরণে প্রাণহানির জেরে বাজির ক্লাস্টার গড়তে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। এগরার বিস্ফোরণে নিহতদের সমবেদনা জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে কথা আরও এক বার স্পষ্ট করেছেন। অথচ, সরকারি নির্দেশ বলছে, রাজ্যে বছরের তিনটি বিশেষ দিনে সব মিলিয়ে বাজি পোড়ানো যাবে মাত্র ৪ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। এর বাইরে পোড়াতে গেলে সংশ্লিষ্ট দফতর বা আদালতের অনুমতি নিতে হবে। ফলে, প্রশ্ন উঠছে, সারা বছরে সরকার নির্ধারিত মাত্র ওই সময়টুকু বাজি পোড়ানোর জন্য কত পরিমাণ বাজি তৈরি করা প্রয়োজন? দরকার যদি অল্প হয়, সে ক্ষেত্রে জেলায় জেলায় ক্লাস্টার গড়ে বিপুল বাজি তৈরি করে কী হবে?

এই প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশকর্মী এবং বাজির বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের একাংশ। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ইংরেজি নববর্ষে (রাত ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে সাড়ে ১২টা), কালীপুজো (রাত ৮টা থেকে ১০টা) এবং ছটপুজোয় (সকাল ৬টা থেকে ৮টা) শুধুমাত্র সবুজ বাজি পোড়ানোর ছাড়পত্র দিয়েছে। এর বাইরে বাজি পোড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দফতর বা আদালতের অনুমতি নিতে হবে। অবশ্য, সেই নির্দেশ যে মানা হয় না তার অজস্র উদাহরণ রয়েছে।

বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চের বক্তব্য, বাজি পোড়ানোর সময় যেখানে নির্দিষ্ট, সেখানে সর্বত্র ক্লাস্টার গড়ে কী লাভ? না কি, কারখানাকে আইনি মোড়ক দিয়ে থরে থরে বাজি মজুত করে খেলা, মেলা, সামাজিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান অথবা ভোটে জেতার উৎসবে যখন তখন ফাটানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হবে?

মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক গৌতম সরকার বলেন, ‘‘পরিবেশগত এবং মানুষের সমস্যার কারণে সবুজ বাজির তত্ত্ব নিয়েও আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। তবুও, নির্ধারিত সময়ের হিসাব করে সেই পরিমাণ বাজি তৈরি করতে ক’টা ক্লাস্টার প্রয়োজন, ভাবা দরকার।’’

চন্দননগরের সংগঠন ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’ দিনের পর দিন রাজ্যের সংশ্লিষ্ট নানা দফতরে চিঠি দিয়ে বাজির বেআইনি কারখানা বন্ধে গলা ফাটিয়েছে বিস্ফোরণে মৃতদের তালিকা তুলে ধরে। সংগঠনের সভাপতি তথা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্ত‌ন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ও একই প্রশ্ন তুলছেন। এক সময় শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কলকাতা হাই কোর্ট নিযুক্ত স্পেশাল অফিসার ছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, বাজির ক্লাস্টার রাজ্যের নতুন ভাবনা নয়।

তিনি জানান, বাজি সংক্রান্ত একটি মামলায় ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে জাতীয় পরিবেশ আদা‌লতে রাজ্য জানিয়েছিল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমানে বাজির ক্লাস্টার তৈরিতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাস্তবে যে কিছুই হয়নি, ফের ক্লাস্টারের ঘোষণা থেকেইতা স্পষ্ট।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE