E-Paper

প্রধান কে? ‘লড়াই’ ঠেকানো নিয়ে চিন্তায় হুগলি তৃণমূল

সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, আগামী ১৬ অগস্টের মধ্যে ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন সম্পূর্ণ করতে হবে। হুগলিতে জেলা প্রশাসন পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের দিন ধার্য করেছে ৯, ১০ এবং ১১ অগস্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৩ ০৭:২১
Party flag of TMC

—প্রতীকী চিত্র।

এ বার অন্য ‘লড়াই’!

ভোট মিটেছে। এ বার পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের পালা। বিশেষ করে প্রধানের কুর্সিতে হুগলির বেশ কিছু পঞ্চায়েতে দলীয় দাবিদারদের মধ্যে ‘লড়াই’ এ বারও জোরদার হবে বলেই মনে করছেন নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ। এমনকি, সেই গোলমাল রাস্তায় নামতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। এ প্রসঙ্গে তাঁরা অতীতের উদাহরণও তুলছেন। তেমন হলে, কী করে বিবাদ সামলানো যাবে, তা নিয়ে জেলা নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়ছে। চিন্তায় পুলিশ-প্রশাসনও।

শাসকদলের জেলা নেতারা জানাচ্ছেন, স্থানীয় স্তরে দলের ব্লক সংগঠন ভোটাভুটি করে পদাধিকারীর প্রাথমিক তালিকা তৈরি করে তাঁদের দেবেন। জেলা নেতৃত্বের তরফে সেই তালিকা রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। রাজ্য নেতৃত্ব চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে। তবে, দলের এই আপাতনিরীহ বিধি শেষ পর্যন্ত ‘যুযুধান’ জনপ্রতিনিধিরা কতটা মানবেন, প্রশ্ন।

সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, আগামী ১৬ অগস্টের মধ্যে ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন সম্পূর্ণ করতে হবে। হুগলিতে জেলা প্রশাসন পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের দিন ধার্য করেছে ৯, ১০ এবং ১১ অগস্ট। ১৪ তারিখ পঞ্চায়েত সমিতির। তৃণমূলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে আমাদের মধ্যস্থতায় সামাল দেওয়া না গেলে, একাধিক তালিকা এলে, আমরা পুরোটাই দলের রাজ্য নেতৃত্বকে পাঠাব। রাজ্য নেতৃত্ব চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে যাঁদের নাম পাঠাবেন, সবাইকে মেনে নিতে হবে।’’

জোড়াফুল শিবিরের একাংশের ধারণা, বাস্তবে সব ক্ষেত্রে এমনটা হবে না। বলাগড়, সিঙ্গুর, পান্ডুয়া, জাঙ্গিপাড়া ব্লক, আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন পঞ্চায়েতে প্রধান পদ নিয়ে দড়ি-টানাটানির সম্ভাবনা রয়েছে। শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের রঘুনাথপুর, কানাইপুর, চণ্ডীতলা-১ ও ২ ব্লকের কয়েকটি পঞ্চায়েতেও ‘সমস্যা’ হতে পারে।

আরামবাগ মহকুমার ৬৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে শাসকদল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ৫১টিতে। বিভিন্ন পঞ্চায়েতে প্রধান পদে দাবিদারদের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসছে। এক পক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অযোগ্যতা, পুরনো অপরাধের ফিরিস্তি অপর গোষ্ঠী পাঠাচ্ছেন দলের নেতৃত্বের কাছে। সংশ্লিষ্ট দাবিদারদের অনেকে তা স্বীকারও করেছেন।

কেউ কেউ পদ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ‘স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা’ বলছেন। শোনা যাচ্ছে, গোঘাট-২ ব্লকের কামারপুকুর পঞ্চায়েতে বিদায়ী প্রধান তপন মণ্ডলের পাশাপাশি ওই চেয়ারের দাবিদার দলের অঞ্চল সভাপতি রাজদীপ দে’ও। তিনি বলেন, ‘‘তপনদা দীর্ঘদিনের নেতা। তাঁর সঙ্গে প্রধানের দৌড়ে আমিও আছি। এটা স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা।’’ তপনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দল যাঁকে ঠিক করবে, তিনিই প্রধান হবেন।’’ দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা যুব সভাপতি পলাশ রায়ের বক্তব্য, ‘‘যোগ্য এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কাউকে দলই প্রধান, উপপ্রধান হিসেবে বেছে নেবে।’’

তৃণমূল সূত্রে খবর, বিভিন্ন পঞ্চায়েতে প্রধান পদের দাবিদার ২ থেকে ৪ জন। আরামবাগ ব্লকের বাতানল পঞ্চায়েতে ওই পদে বিদায়ী প্রধান দিলীপ রায়, উপপ্রধান টোটন দে, নির্মাল্য পোড়েল এবং মুন্সি সাইদুর রহমানের নাম ভাসছে। গোঘাট-২ ব্লকের শ্যামবাজার পঞ্চায়েতে লড়াই বিদায়ী উপপ্রধান শিবানী নন্দী, অঞ্চল নেতা প্রভাত গোস্বামী, ইয়াসিন খান। গোঘাট-১ ব্লকের বালি পঞ্চায়েতে রঘুনাথ সাঁতরা, তরুণ মণ্ডল, সুকান্ত মণ্ডল দাবিদার। খানাকুল-১ ব্লকের তাঁতিশাল পঞ্চায়েতে তিন, পুরশুড়ার শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতে দু’জনের নাম উড়ছে।

জেলা সভাধিপতি পদে আপাতত তিন জন দাবিদারের নাম চর্চায়। ওই পদ এ বার সংরক্ষিত। দাবিদার কম হলেও, ‘লড়াই’ জোরদার হবে বলেই রাজনৈতিক মহলের অনুমান।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Hooghly TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy