Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩
Damodar River

দামোদরের বালি ‘চুরি’তে বাঁধ নিয়ে চিন্তা

প্রতিদিনই দামোদরের বুকে বেশ কয়েকটি নৌকা ঘোরাফেরা করে। অভিযোগ, প্রতিটি নৌকায় থাকা ৪-৫ জন যুবক বালতি নিয়ে নৌকায় বালি তোলে। সেই বালি দামোদরের পাড়ে ছোট ছোট স্তূপে জড়ো করা হয়।

দামোদর থেকে চলছে বালি তোলা।

দামোদর থেকে চলছে বালি তোলা। ছবি: সুব্রত জানা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৮
Share: Save:

দিনের আলোয় বৈধ অনুমতি ছাড়া প্রকাশ্যেই দামোদর নদ থেকে বালি তুলে পাচার হলেও প্রশাসনের হুঁশ নেই বলে অভিযোগ। নদের পাড় থেকে ক্রমশ বালি তোলায় বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের গদাইপুর, বোয়ালিয়া-সহ আশপাশের এলাকার মানুষ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রতিদিনই দামোদরের বুকে বেশ কয়েকটি নৌকা ঘোরাফেরা করে। অভিযোগ, প্রতিটি নৌকায় থাকা ৪-৫ জন যুবক বালতি নিয়ে নৌকায় বালি তোলে। সেই বালি দামোদরের পাড়ে ছোট ছোট স্তূপে জড়ো করা হয়। পরে ছোট তিন ও চার চাকা গাড়িতে সেই বালি বিভিন্ন জায়গায় পাচার করা হয়।

গদাইপুরের এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘কিছুদিন আগেও রাতের অন্ধকারে নৌকায় যন্ত্র লাগিয়ে বালি চুরি করা হত। তা বন্ধ করেছে পুলিশ। কিন্তু এরপরও যে ভাবে প্রকাশ্যে বালি তোলা হচ্ছে, তাতে দামোদরের গতিপথ বদলে যেতে পারে।’’

আর এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘এমনিতেই এখানকার বাঁধগুলি দুর্বল। তার উপর পাড় ঘেঁষে বালি তোলায় যে কোনওদিন বাঁধে ধস নামতে পারে। পুলিশ ও প্রশাসনকে বিষয়টি বহুবার জানানো হয়েছে। কিন্তু সুরাহা হয়নি।’’

Advertisement

এই বিষয়ে স্থানীয় সিপিএম নেতা গৌতম পুরকাইত বলেন, ‘‘শাসকদলের মদতেই এই অবৈধ কাজ চলছে। পুলিশের সঙ্গে বালি কারবারিদের যোগাযোগ আছে। বালি চুরির বিষয়ে বহুবার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, কিন্তু তা বন্ধ হয়নি।’’

হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপি সভাপতি অরুণউদয় পাল চৌধুরী বলেন, ‘‘সারা রাজ্য জুড়ে বালি থেকে শুরু করে কয়লা, গরু, ঘর, শিক্ষাব্যবস্থা সবেতেই লুটপাট চালাচ্ছে শাসকদল। এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে চুরির সংস্কৃতি চলছে। তার ফল ভুগছেন সাধারণ মানুষ।’’

এই বিষয়ে উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের হাটগাছা ২ পঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা প্রদীপ পাল বলেন, ‘‘আগে নদ থেকে বালি তোলা হত। সেটা বন্ধ করা হয়েছে। তবে কিছু মানুষ রাতের অন্ধকারে এখনও এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে শুনেছি। বিষয়টি প্রশাসনকে জানাব। অবৈধ ভাবেবালি তোলা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’’

উলুবেড়িয়া ১ বিডিও নীলাদ্রি শেখর দে বলেন, ‘‘বালি তোলা বন্ধ করতে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছিল। বালি চুরি বন্ধও হয়েছিল। অভিযোগ পেলে ফের অভিযান চালানো হবে।’’

সেচ দফতরের দাবি, বালি চুরির বিষয়টি তাদের জানা নেই। হাওড়া জেলা সেচ দফতরের এক আধিকারিক মনোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের কর্তা বলেন, ‘‘বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে বালি চোরেদের ধরা হয়েছে। তাদের নৌকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে এখনও মাঝেমধ্যে চুরির অভিযোগ উঠছে। আরও কড়া নজরদারি চালানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.